আত্রাইয়ে নৌকা তৈরি ও বিক্রির ধুম

আবু ইউসুফ, নওগাঁ থেকে
২২ জুলাই ২০২৩

উত্তর জনপদের মৎস্য ভান্ডার খ্যাত নওগাঁর আত্রাইয়ে বর্ষা ঘিরে নৌকা তৈরি ও বিক্রির ধুম পড়েছে। আত্রাই নদীতে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নৌকা তৈরি। নৌকা তৈরি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কাঠমিস্ত্রি কারিগররা। নতুন নৌকা তৈরির পাশাপাশি পুরাতন নৌকা মেরামত করছেন তারা। স্থানীয় বিভিন্ন হাটে এখন বিক্রি হচ্ছে নৌকা।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গেছে, কাঠ মিস্ত্রিরা কেউ বাড়ির আঙিনায় বা পাড়ার পরিত্যক্ত জায়গায়, কেউ কেউ হাটের পাশে নৌকা তৈরি করছেন। কেউ কাঠ চিরাচ্ছেন, কেউ তক্তা গুড়া বানাচ্ছেন, আবার কেউ রান্দা দিয়ে কাঠ মসৃণ করছেন, কেউ কেউ তারকাঁটা (ছোট লোহা) পাতাম (লোহার পাত) দিয়ে তক্তা জোড়া লাগাচ্ছেন। এসব কাজে সহযোগিতা করছেন পরিবারের লোকজন।

কাঠ মিস্ত্রি অজিত সূত্রধর, উৎপল সূত্রধর, নিরেন সূত্রধর, অখিল চন্দ্র সূত্রধরসহ অনেকেই বলেন, এখন বড় নৌকা খুব একটা তৈরি হয় না- ছোট নৌকার কদর বেশি। একটি নৌকা তৈরিতে তিনজনের - দিন সময় লাগে। বড় নৌকার চাহিদা কম প্রসঙ্গে তারা জানান, এখন প্রায় প্রত্যেক এলাকায় যোগাযোগের জন্য রাস্তা করা হয়েছে। ফলে দূরের যাত্রার জন্য কেউ বড় নৌকা তৈরি করে না। বর্ষায় পাড় থেকে ওপাড় যাতায়াতের জন্য ছোট ছোট নৌকার প্রয়োজন হয়।

ভবানীপুর গ্রামের নিরেন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, ৫৫ বছরের বেশি সময় ধরে কাঠ মিস্ত্রির কাজ করছি। ছোটবেলা থেকেই হাতুড়ি বাটালের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে। বাপ-দাদার কাছে কাজ শিখেছি। তিনি জানান, বর্ষার সময় নৌকা তৈরি করি। শুকনো মৌসুমে ঘর নির্মাণের পাশাপাশি খাট, চেয়ার, টেবিল ড্রেসিং টেবিল, আলনা, আলমারি ইত্যাদি তৈরি করে হাটে বিক্রি করে সংসার চলে।

সমসপাড়া হাটে নৌকা বিক্রি করতে আসা উপজেলার পারমহোনঘোষ গ্রামের আব্দুল লতিফ, ফেকু, আব্দুল মজিদসহ অনেকে বলেন, ‘আমরা কৃষক। বর্ষায় মাঠ ডুবে যাওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েছি। নৌকার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় নৌকা বিক্রি কররছি।

তারা আরো জানান, বর্তমানে কাঠ-বাঁশের দাম বেশি এবং মিস্ত্রী মজুরি বেশি। তাই খুব বেশি লাভ না হলেও যা হয় তা দিয়ে সংসারের হাট-বাজার খরচ চলে।

আত্রাইয়ের পাশাপাশি আশেপাশের রাণীনগর, নাটোরের সিংড়া এবং চলনবিল এলাকার লোকজনও নৌকা ক্রয় করতে এ হাটে আসেন বলে জানান তারা।

 

বিডি/সি/এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর