প্রতিকী ছবি
নারী-পুরুষ মিলেই সংসার। এ সংসার জীবন ভালোবাসা আর ভালো লাগায় অটুট রাখতে
প্রয়োজন স্বামী-স্ত্রী উভয়ের মধ্যে বোঝাপড়া। এ জীবনের বন্ধুর পথ অমসৃন পথ পাড়ি দিতে
দুজনকেই হতে হবে একটু কৌশলী। তাই যখনই দুজনের বোঝাপড়ায় ফাটল ধরবে, কিংবা সংসারে জ্বলে
উঠবে অশান্তির আগুন, তখন মাথা ঠাণ্ডা রেখে কিছু টিপস মেনে চললেই সহজেই পরিত্রাণ পাওয়া
সম্ভব।
আমেরিকার মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট ভেরিওয়েল মাইন্ডের গবেষণায়ও এমনটি
বলা হয়েছে। টিপসগুলো হলো:
ঝগড়ার সময় এক সাথে দু’জনের রাগ নয়
সংসারে মতবিরোধ হবে, ঝগড়াও হবে- এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এক সাথে দুজনই ঝগড়ার
প্রতিযোগিতায় মেনে যাওয়া ঠিক না। ঝগড়ার সময় একজন রাগ দেখালে অন্যজনের শান্ত থাকার চেষ্টা
করা উচিত। একজনের রাগকে অন্যজনের সামাল দিতে হবে শান্ত গলায় যুক্তি দিয়ে। দিন শেষে
সংসারটা দুজনের। তাই ঝগড়া লাগলেও দ্রুত মিটিয়ে নেওয়া উচিত। সংসারে ঝগড়া পুষিয়ে রাখাটা
একেবারেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
পুরোনো তিক্ততা নিয়ে নতুন করে আলোচনা না করা
সঙ্গীর ছোট-বড় আচরণ আপনার খারাপ লাহতেই পারে। কিন্তু কোনো ঘটনা ঘটলেই সেই
সব পুরোনো তিক্ততা তুলে এনে নতুন করে ঝগড়া করা মোটেও কাম্য নয়। এতে স্বামী-স্ত্রীর
মধ্যে দূরত্ব তৈরি হতে পারে। তাই চাপা দুঃখ বা রাগ নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করে নেওয়াই
উত্তম। এতে সম্পর্কের অনেক বিষয় পরিষ্কার হয়ে যায়।
ছোট বিষয়ে হঠাৎ রেগে না যাওয়া
স্বামী-স্ত্রী মধ্যে প্রায়ই দেখা যায় যেকোনো একজন ছোট ছোট বিষয় নিয়ে হঠাৎ
করেই রেগে যাচ্ছেন। যেটা আপনার সঙ্গী একেবারেই মানতে পারছেন না। হয়তো চুপ রয়েছেন পরিস্থিতি
ঠাণ্ডা রাখার জন্য। কিন্তু এভাবে সংসারে অল্প দিনেই অশান্তি বাড়বে। কারণ ধৈর্য্য সবসময়
এক থাকে না।
ভালো শ্রোতা হওয়া
আপনার সঙ্গী কী বলছেন, সেই কথাগুলো মন দিয়ে শোনা ভালো বোঝাপড়ার জন্য খুবই
জরুরি। দুটো কথা শুনেই নিজের মতামত বা প্রশ্ন করতে শুরু করবেন না। এতে আপনাদের মধ্যে
সমস্যা বাড়বে, বৈ কমবে না। এমনকি কথা শোনার সময় কোনো কাজ নিয়ে ব্যস্তাতা দেখাবেন না।
তাহলে আপনার সঙ্গী ভেবে নেবেন আপনি অবহেলা করছেন। তাই ভালো শ্রোতা হওয়ার চেষ্টা করুন।
এতে সম্পর্ক ভালো থাকবে।
মতামত চাপিয়ে দেবেন না
আপনার মতামত সঙ্গীর ওপর চাপিয়ে না দিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিন। সঙ্গীর
মতামতটি শোনার চেষ্টা করুন। তিনিও একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। মতের অমিল হলে দুজনই যুক্তি
দিয়ে নিজেদের কথা উপস্থাপন করুন। তারপর আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্তে আসুন। দুজনের মতামতকে
দুজনই গুরুত্ব দিন।
সব বিষয় পছন্দ হতেই হবে এ ধারণা ত্যাগ করুন
সঙ্গীর সব বিষয় পছন্দ হতেই হবে তেমনটি নয়। তার কিছু কিছু কাজ, অভ্যাস খারাপ
লাগতেই পারে। তাতেই প্রতিক্রিয়া দেখাবেন না। সংসারে সহ্য ক্ষমতা বাড়াতে হবে দুজনেরই।
দুজনেরই আলাদা আলাদা খারাপ কিছু অভ্যাস থাকতে পারে। তাই আচরণগুলো নিয়ে ভাবুন। যদি কিছুটা
বদলানো যায়, তাহলে আলোচনা করে বদলে ফেলুন।
বেশি প্রত্যাশা নয়
সম্পর্ক থেকে কেউই বেশি প্রত্যাশা করবেন না। সম্পর্ক সুন্দর রাখতে হলে প্রত্যাশা
কমাতে হবে। প্রত্যাশা যত বাড়বে সেই সঙ্গে বাড়বে অভিযোগও। তাই প্রত্যাশা কমিয়ে পরিস্থিতি
বোঝার চেষ্টা করুন। মানসিক স্বাস্থ্যে জোর দিন। নিজেরা সুন্দর সময় কাটান।
আর্থিক বোঝাপড়া
দাম্পত্য সম্পর্কে আর্থিক বোঝাপড়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সংসার দেখার দায়িত্ব
যদি হয় স্ত্রীর, তবে প্রতিদিনের আলোচনায় কোন খাতে কত টাকা লাগছে তা আলোচনা করে তার
হাতে তুলে দিন। সেক্ষেত্রে স্বামীর আয় বুঝে স্ত্রীর খরচ করা উচিত। দুজনই কর্মজীবী হলে
সংসারে খরচ চালানোর বিষয়গুলো আলোচনা করে দুজন মিলে করা সম্পর্কের জন্য ভালো।
ক্ষমা করতে শিখুন
কোনো ভুল হলে সেটাকে বড় করে না দেখে ক্ষমা করার মানসিকতা রাখতে হবে। ভুলের
বিষয়টা অন্যের কাছ থেকে না শুনে নিজেই সঙ্গীকে জানিয়ে ক্ষমা করতে শিখতে হবে।