'ও আল্লাহ মরা হলেও ফিরা দাও, ছায়া খানটা দেখবো'

মো. মানিক হোসেন, রাজশাহী
২২ জুলাই ২০২৩

' আল্লাহ মরা হলেও ফিরা দাও। আমি দেখবো। ওর ছায়া খানটা দেখব।' রাজশাহীর পদ্মা নদীর পাড়ে শনিবার  (২২ জুলাই) সকালে এভাবে বিলাপ করতে দেখা গেছে জোসনা বেগমকে (৬২)

শুক্রবার দুপুরে তার দুই নাতি সিয়াম ও সাজিদ গোসল করতে নেমে ডুবে গিয়ে প্রবল স্রোতে নিখোঁজ হয়। এর মধ্যে সিয়াম মামাতো বোনের বিয়ের দাওয়াতে নানার বাড়িতে এসেছিল। বিয়ের অনুষ্ঠান ঘিরে নাতির জন্য নতুন জামা কিনে রেখেছিলেন তিনি।

জোসনার সাথে পদ্মা পাড়ে এসেছেন সিয়ামের মা সিমা বেগমও। সঙ্গে রয়েছেন সাজিদের দাদিও। দুই শিশুর স্মৃতি মনে করে আহাজারি করছেন তারা। তাদের প্রত্যাশা শেষ দেখা যেন হয় নিখোঁজ  সিয়াম ও সাজিদের।

সিয়াম চর সাতবাড়িয়া গ্রামের মো. শুকুর আলীর ছেলে ও সাজিদ চরশ্যামপুর এলাকার নেকবর আলীর ছেলে

এদিকে শুক্রবার সন্ধ্যায় বিরত ঘোষণা করা উদ্ধার অভিযান শনিবার (২২ জুলাই) সকাল টা থেকে পুনরায় শুরু করেছেন ডুবুরি দল। নিখোঁজ হওয়ার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও এখনও তাদের উদ্ধার করা সম্ভব  হয়নি।

জোসনা আঞ্চলিক ভাষায় আরও বলেন, ‘আমার লাতির জামা। আমার ব্যাটার বাড়িতে বিহ্যা (বিয়ে) খ্যাতে আসিছিল। তিন দিন থ্যাকবে বুলি। গাঙ্গে গা ধুতে এসেছিল। গা ধুয়ে গিয়ে খানার ভাত গোস্ত খাবে। বাড়িতে মানা করলে শুনো না। ব্যাটা উঠি আসো না গো কালজাতে লাগ না গো।’

সিয়ামের মা সীমা বেগমও পদ্মার ধারে বসে আহাজারি করছে বার বার। বলছেন, ' বাপ তোকে কত বুলিছি তুই গাঙ্গে আসিস নি। বাপ তুই কতি গেলি। বাপ তুই পানিতে ডোবার সময় কত হাঁচুর পাঁচুর করেছিস। কতই পানি খ্যাচিস।'

 

রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আব্দুর রউফ  বলেন, সকাল থেকে উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়েছে। পদ্মায় স্রোতের কারণে  উদ্ধার অভিযানে তাদের বেগ পেতে হচ্ছে। তিনজন ডুবুরি উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছেন।

 

বিডি/সি/এমকে

 


মন্তব্য
জেলার খবর