ভাড়া পুকুরই পাট চাষীদের ভরসা

সাজেদুর রহমান সাজ্জাদ, গুরুদাসপুর(নাটোর)
০১ অগাস্ট ২০২৩

ক্যালেন্ডারে ভরা বর্ষা মৌসুম এখন। কিন্তু নাটোরের গুরুদাসপুরসহ চলনবিল অঞ্চলের নিম্নাঞ্চল ছাড়া অন্যত্র বর্ষার পানি নেই। বৃষ্টিপাতও অন্যান্য বছরের তুলনায় কম হওয়ায় খাল-বিলে পানি নেই। ফলে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন তারা। পাট জাগ দিতে তাই বাধ্য হয়ে পুকুর ভাড়া নিতে হচ্ছে তাদের।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুনর রশিদ জানান, অনাবৃষ্টির কারনে কৃষক এবার তার উপজেলায় গত বছরের চেয়ে ২৫০ হেক্টর কম পাট চাষ করেছেন। ১৪ হাজার চাষি হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করেছেন। কিন্তু পর্যাপ্ত বৃষ্টি না থাকায় ও ভালোমতো বর্ষা না হওয়ায় চাষীরা পাট পঁচানো নিয়ে সমস্যায় আছেন।  পাট প*চাতে বিকল্প রিবন রেটিং পদ্ধতি ব্যবহারের পরামর্শ তার।

কৃষক জানান, জমিতে পাট শুকিয়ে গেলেও পানির অভাবে কাটছেন না। অনেকে পাট জাগ দিতে পুকুর-ডোবা ভাড়া নিচ্ছেন। বাড়তি খরচ হলেও অনেক চাষি দূরে ছোট খাল, বিল,নদী-নালা,ডোবায় পাট জাগ দিতে বাধ্য হচ্ছেন। কেউ উন্মুক্ত জলাশয়ে পাট জাগ দিলেও পানি কমে যাওয়ায় তারা বেশি বিপাকে পড়েছেন। পানি সংকটে পরিবহন খরচ পুকুর ভাড়ার জন্য বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে তাদের।

গুরুদাসপুর পৌর সদরের আনন্দ নগর মহল্লার পাট চাষি আবু সুফিয়ান,আয়ুব কাজি,দেলবর হোসেনসহ অন্তত ১০জন কৃষক জানান, বৃষ্টি না থাকায় খাল,বিল জলাশয়ে পানি নেই। পাট কেটে জমিতে গাদা করে রেখেছি। সেখানেও রোদে পুড়ে পাট শুকিয়ে যাচ্ছিলো। বাধ্য হয়ে অনেকে হাজার টাকায় পুকুর ভাড়া নিয়ে সেখানে পাট জাগ দিচ্ছেন।

তারা আরো জানান, একবিঘা জমিতে পাট চাষে বীজ ও সার, বপন, পরিচর্যা ও শ্রমিক খরচ মিলে খরচ হয় প্রায় ১৬ হাজার টাকা। পানি না থাকায় পরিবহন পুকুর ডোবা ভাড়া শ্রমিক বাবদ অতিরিক্ত হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। প্রতি বিঘায় গড় উৎপাদন মণ। প্রতিমণ পাটের বর্তমান বাজার দর হাজার ৫০০ থেকে হাজার টাকা। মণের গড় মুল্য ২০ হাজার টাকা। এ দামে পাট বিক্রি করলে খরচ উঠলেও বেশি লাভ হবে না বলে জানান তারা।

একই মহল্লার পুকুর মালিক নজিবর রহমান জানান, পুকুরেও পর্যাপ্ত পানি নেই।  বৈদ্যুতিক কিংবা ডিজেল চালিত সেচযন্ত্র দিয়ে পানি দেওয়া হচ্ছে নিজ খরচে। এ কারনে পুকুর ভাড়াও বেড়েছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. মতিয়ার রহমান বলেন, ভালো ফলন হলেও অনাবৃষ্টির কারনে পাট নিয়ে চাষীরা সমস্যায় রয়েছেন। দেরীতে হলেও বৃষ্টির দেখা মিলছে। আশা করা যাচ্ছে, সপ্তাহের মধ্যেই চাষীদের সমস্যা থাকবে না।

 

বিডি/সি/এমকে

 


মন্তব্য
জেলার খবর