পঞ্চগড়ে ঠিকমতো বাস্তবায়ন না করেই প্রকল্পের টাকা উত্তোলন

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
০১ অগাস্ট ২০২৩

পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় ঠিকমতো বাস্তবায়ন না করেই বার্ষিক রাজস্ব উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় বেশ কয়েকটি প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এসব প্রকল্পের বিষয়ে কিছুই জানেন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সভাপতিরা। এমন অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, সরকারের টাকা নয়ছয় এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলেও যেন দেখার কেউ নেই।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফয়সাল জানান, প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। টাকা উত্তোলন করে বিডি করে রাখা হয়েছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আটোয়ারী উপজেলা প্রকৌশলীর দেওয়া তথ্যমতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক রাজস্ব উন্নয়ন সহায়তা খাতের জন্য ৪০ স্ক্রীমে প্রায় ৮২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে দরপত্রের মাধ্যমে ২৫ স্ক্রীমের জন্য দরপত্রের মাধ্যমে প্রায় ৬০ লাখ এবং প্রকল্প সভাপতির মাধ্যমে ১৫ প্রকল্পে ২২ লাখ ১৯ হাজার টাকা।

এদিকে খোঁজ নিয়ে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানান গেছে,  সভাপতির মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়নের তালিকায় আছে বলরামপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে আরসিসি রিং পাইপ সরবরাহ স্থাপন। কৃষি কাজের সুবিধার্থে  দেড় লাখ টাকা বরাদ্দের এ প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে বিল উত্তোলন করা হয়েছে। প্রকল্প সভাপতি জবা রানী জানেন না- তার নামে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

দুই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া আটোয়ারী আদর্শ মহিলা কলেজে আসবাবপত্র মেরামত সংক্রান্ত প্রকল্পের বাস্তবায়ন ঠিকমতো হয়নি। কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান বলেন, তাকে ৪২ হাজার টাকা  দেওয়া হয়েছে। সেটা দিয়ে কিছু আসবাবপত্র কিনেছেন। প্রকল্পের সভাপতি রাধানগর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য হাফিজা বেগম বলেন, প্রকল্প সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। ইউএনও অফিসের সুজন এলজিইডি অফিসের বেলাল নামের দু’জন আমাকে ডেকে স্বাক্ষর নিয়েছিল।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গরীব অসহায় পরিবারের মাঝে নলকূপ সরবরাহ নলকূপের গোড়া পাকাকরণ বরাদ্দ দেওয়া হয় দুই লাখ টাকা। রাস্তার জলাবদ্ধতা দূরীকরণের জন্য এক ফুট ডায়া বিশিষ্ট রিং পাইপ সরবরাহ প্রকল্পের বরাদ্দ দেড় লাখ টাকা। তোড়িয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন মুক্তা প্রকল্প সভাপতি। কিন্ত তিনি জানেন না- তার নামে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

উপজেলার একাত্তর আশ্রায়ন প্রকল্পের পুকুর পাড়ে মাটি ভরাট প্যালাসাইডিং করার জন্য লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রকল্পের সভাপতি ইউপি সদস্য পশিরুল ইসলাম। প্যালাসাইডিং করা না হলেও পুকুরে কিছু মাটি ভরাট করা হয়েছে। কিন্তু সভাপতি পশিরুল ইসলাম বলতে পারেন না, সেটা কোন প্রকল্পের কাজ।

ইউপি সদস্য পশিরুল ইসলাম বলেন, কী প্রকল্প; কী কাজ- সেটা জানি না। উপজেলা নির্বাহী স্যারের সাথে ঘোরেন সুজন। তিনি স্বাক্ষর চেয়েছেন, চেয়ারম্যানকে অবহিত করে স্বাক্ষর দিয়েছি।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফয়সাল জানান,কাজ চলমান রয়েছে, প্রকল্প সভাপতি না জানার বিষয়টি চেয়ারম্যানরা বলতে পারবেন। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করেন। তারাই কাজ বাস্তবায়ন করেন।

 

বিডি/সম্রাট হোসাইন/সি/এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর