সকলে এখন জাস্টিন ট্রুডোর বিচ্ছেদ নিয়ে আলোচনায় মুখর। এমনকি তাদের বিচ্ছেদ নিয়ে মন্তব্য করেছেন ভারতে বসবাসকারী বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিনও।
তিনি সোফি গ্রেগরি হলে কোনোদিনই জাস্টিনের মতো সুদর্শন, আদর্শবান, মানবিক এবং এমন পাগলকরা প্রেমিককে ত্যাগ করতেন না বলে মন্তব্য করেছেন।
তসলিমা নাসরিন বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ কথা লিখেন।
পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমি তো ডিভোর্স দিতে খুব পারি। ভাবতাম দুনিয়ায় আমিই বুঝি খুঁতহীন নির্ভেজাল সম্পর্ক চাই, ছোটলোকির সঙ্গে, প্রভুত্ব ফলানোর সঙ্গে আপস একেবারেই করি না। এখন দেখছি আমার চেয়েও বেশি নিখুঁত সম্পর্কে বিশ্বাস করেন সোফি গ্রেগরি।’
তসলিমা লেখেন, তিনি যদি সোফি হতেন, তাহলে কোনোদিনই ট্রুডোকে ছাড়তেন না। এ লেখিকার মনে প্রশ্ন জাগে: এমন সুপুরুষের কি সত্যিই কোনো খুঁত থাকতে পারে!
তিনি আরও লেখেন, ‘আসলে দূর থেকে আমরা কোনোদিনই জানব না কী কারণে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে ফাটল ধরেছে। তারপরও আমার একটি আশা, কিছুদিন পর যখন স্বামী-স্ত্রী তাদের সন্তানদের নিয়ে পারিবারিক ছুটি কাটাবেন, তখন পরস্পরের প্রতি তাদের যে তীব্র ভালোবাসা, সেটি এক ফুতকারে তাদের অভিমান, অভিযোগ, আর অসন্তোষগুলো তুলোর মতো উড়িয়ে দেবে। শুধু আশায় বসতি! আমার আশা পূরণ না হওয়ার সম্ভাবনাই সম্ভবত বেশি।’
তসলিমা নাসরিন আরও লিখেছেন, ‘পৃথিবীর কত সুখী দম্পতির ছাড়াছাড়ি হয়ে গেল। কত আদর্শবান জুটির তালাক হয়ে গেল। আমরা বাইরে থেকে শুধু কল্পনা করে নিই উপন্যাসের নায়কের মতো, সিনেমার হিরোর মতো একেকজন পছন্দের পুরুষকে, যেন তারা অনৈতিক কিছু করতে পারেন না।’
‘বিল ক্লিনটনকে নিয়েও তো এমনই ভেবেছিল গোটা জগৎ। কিন্তু দেখল তারও স্খলন হয়েছে, এত বড় স্খলনের পরও কিন্তু বিলের স্ত্রী বিলকে ডিভোর্স দেয়নি। আর জাস্টিনের কোনো স্খলন না থাকলেও সম্পর্ক চুরমার হয়ে গেল। হয়তো সোফিই নতুন কোনো সম্পর্কে জড়িয়েছেন–কে জানে! অথবা কে জানে, জাস্টিনই উভকামী কি না!’
এ লেখিকা আরও লেখেন, ‘কেন অন্যের ব্যক্তিগত ব্যাপারে নাক গলাচ্ছি! নাক থাকলে নাক গলাতেই হয়। পাবলিক ফিগারদের জীবন পাবলিকের। পাবলিক তাদের নিয়ে গবেষণা করবে। তাদের চরিত্রের চুলচেরা বিশ্লেষণ করবে। পাবলিক তাদের জন্য হা-হুতাশ করবে, কাঁদবে। পাবলিক তাদের সুখে সুখী হবে। পাবলিক ছাড়া তাদের চলে না। পাবলিকেরও তাদের ছাড়া চলে না।’
তসলিমার মতে, ‘সুখী হওয়াটাই আসল। নিজের জীবন দিয়ে জানি আমি যখন একা, আমি সুখী। দু-তিনটে টক্সিক মাসক্যুলিনিটির কবল থেকে দ্রুত মুক্ত হয়ে আমি একা একাই ভালো থাকি। কিন্তু টক্সিক না হয়ে সম্পর্ক যদি ভালোবাসাময় হতো! তাহলে ভালোবাসা আঁকড়ে পড়ে থাকতাম সবটা জীবন। আসলে ভালোবাসা ছেড়ে কেউ কোথাও যায় না। যারা যায়, অবিশ্বাসের সাপ তাদের ছোবল দিতে চায় বলেই যায়।’