গ্রাহকের মোটা টাকা হাতিয়েছেন কেয়া-আরহাম ফাউন্ডেশনের শাখা ব্যবস্থাপক সুমি

নওগাঁ প্রতিনিধি
০৮ অগাস্ট ২০২৩

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার স্থানীয় কেয়া-আরহাম ফাউন্ডেশনের শাখা ব্যবস্থাপক শাম্মি আক্তার সুমি গ্রামের ঋণ প্রত্যাশী সাধারণ মানুষের মোটা টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। গবাদিপশু পালনসহ বিভিন্ন ধরণের ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এ টাকা সংগ্রহ করেন তিনি। কিন্তু পরে ঋণও দেননি, তাদের কাছে থেকে নেওয়া টাকাও ফেরত দেননি। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে দেওয়া ভুক্তভোগী ৮ নারীর অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে এ কথা। শাম্মি আক্তার সুমি দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের আব্দুল জলিলের মেয়ে।

জানা গেছে, চলতি বছরে সুমি উপজেলার বানিয়াপাড়া ও ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে কেন্দ্র চালু করেন। বানিয়াপাড়া কেন্দ্রের ১৫ জন সদস্যকে প্রশিক্ষণসহ গরু-ছাগল দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছে থেকে জনপ্রতি ৬শটাকা হারে সংগ্রহ করেন। পরর্তীতে প্রশিক্ষণের বিষয়ে নানা তালবাহানা করেন। একপর্যায়ে জনকে ১০টি করে মুরগির বাচ্চা দেন। বাকিদের  কিছুই দেননি, এমনকি টাকাও ফেরত দেননি। ডাঙ্গাপাড়া কেন্দ্রের সদস্য সফুরা, নাছিমা, পাখি সেফালীসহ জনের কাছে থেকে ঋণ দেওয়ার কথা বলে মোটা টাকা সংগ্রহ করেন। কিন্তু পরবর্তীতে ঋণও পায়নি, টাকাও ফেরত পায়নি তারা।

এদিকে দীর্ঘদিনেও ঋণ বা টাকা ফেরত না দেওয়ায় আগস্ট ফাউন্ডেশনের রাণীনগর শাখায় অবস্থায় নেয় ভুক্তভোগীরা। এ সময় চাপের মুখে পরে তাদের টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে স্ট্যাম্পে সাক্ষর দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগীদের একজন বানিয়াপাড়া গ্রামের লিপি বিবি জানান, সুমি আমাদের গ্রামের ১৫ জনকে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এর প্রতিকার চেয়ে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

সিম্বা গ্রামের ফজলু তার স্ত্রী জানায়, ঋণ দিতে চেয়ে সুমি হাজার টাকা নিয়েছে। কিন্তু আজও ঋণ দেননি। আরেক ভুক্তভোগী আরজিনা জানান, আমিসহ দুইজনকে এক লাখ টাকা করে ঋণ দেওয়ার কথা বলে আমাদের কাছ থেকে ১০ হাজার করে ২০ হাজার টাকা নিয়েছেন সুমি। আমার দেবরকে লোন দিবে বলে ১০ হাজার টাকা নিয়েছে। বেশ কিছুদিন হলে গেলেও ঋণ না দিয়ে ঘুরাচ্ছেন।

শাখা ব্যবস্থাপক অভিযুক্ত শাম্মি আক্তার সুমি বলেন, যে সব অভিযোগ করা হয়েছে, তার সবটাই মিথ্যা। বর্তমানে আর্থিক ঋণের ক্ষেত্রে চেক স্ট্যাম্পের কোন আইনগত মূল্য নেই। তাই ফাউন্ডেশনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় ঋণের পরিমাণের বিপরীতে জামানত নিয়েছি। যাচাইবাছাই শেষে ঋণ দেওয়ার মতো হলে ঋণ দেওয়া হবে।

কেয়া-আরহাম ফাউন্ডেশনের নওগাঁর সাধারণ সম্পাদক তোতা বলেন, ফাউন্ডেশনটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। ঋণ এবং অগ্রিম অর্থ আদায়ের কার্যক্রম ফাউন্ডেশন এখনো হাতে নেয়নি। তিনি জানান, সুমির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হুসেইন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিডি/ ইউসুফ/সি/এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর