দেশে পাবলিক পরীক্ষা এলেই সক্রিয় হয়ে ওঠে প্রশ্নফাঁস চক্র, প্রশ্নফাঁস করা হয় নানা কায়দায়। প্রশ্নপত্র ফাঁসের এসব চক্রকে নির্মূলে তৎপর রয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসকারী একটি চক্রের মাস্টারমাইন্ডসহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি।
চক্রটি ২০০১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ১৬ বছরে ১০ বার মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় মোটা টাকার বিনিময়ে শ’ শ’ পরীক্ষার্থীর কাছে প্রশ্ন সরবরাহ করেছে। এ টাকা দিয়ে দেশে বিলাসবহুল জীবনযাপনের পাশাপাশি বিদেশেও পাচার করেছে তারা। তাদের সহায়তায় মেডিকেলে ভর্তি হয়ে অনেকে ইতোমধ্যে ডাক্তারিও পাস করেছে।
রোববার (১৩ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনে এ চক্রের কয়েকজনকে গ্রেফতারের পাশাপাশি প্রশ্নফাঁস সংক্রান্ত তথ্য জানান সিআইডির প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী। রাজধানী ঢাকার মালিবাগে সিআইডির সদর দফতরের মিডিয়া সেন্টারে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেফতারদের মধ্যে ৭ চিকিৎসকসহ ১২ জন আছে। এরা হচ্ছে— ডা. ময়েজ উদ্দিন আহমেদ প্রধান (৫০), ডা. সোহেলী জামান (৪০), ডাক্তার মোহাম্মদ আবু রায়হান, ডা. জেডএম সালেহীন শোভন (৪৮), ডা. মো. জোবায়দুর রহমান জনি (৩৮), ডা. জিল্লুর হাসান রনি (৩৭), ডা. ইমরুল কায়েস হিমেল (৩২), জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া মুক্তার (৬৮), রওশন আলী হিমু (৪৫), আখতারুজ্জামান তুষার (৪৩), জহির উদ্দিন আহমেদ বাপ্পি (৪৫) ও আব্দুল কুদ্দুস সরকার (৬৩)। এদের প্রায় সবাই মেডিকেল ভর্তি কোচিং সেন্টার বা প্রাইভেট পড়ানোর আড়ালে প্রশ্নফাঁস করতেন।
সংবাদ সম্মেলেনে জানানো হয়, মিরপুর মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ২০১৮ এর একটি মামলা তদন্ত করতে গিয়ে এ চক্রের হদিস পাওয়া যায়। চক্রটিতে অন্তত ৮০ সদস্য রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এ চক্রের মাস্টারমাইন্ড জসীম উদ্দিন ভূঁইয়ার কাছ থেকে একটি গোপন ডায়েরি উদ্ধার করা হয়েছে। ডায়েরিটিতে সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা চক্রের অন্যান্য সদস্যদের নাম রয়েছে। এদের ধরতে সিআইডির অভিযান অব্যহত আছে। তাছাড়া তাদের কাছে প্রশ্ন পেয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী মেডিকেলে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে অনেকে ডাক্তারি পাস করেছে। এদের চিহ্নিতসহ আইনের আওতায় আনার কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বিডি/এন/এমকে