দেশের ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সব নাগরিকের জন্য সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা ১৭ আগস্ট চালু হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) আনুষ্ঠানিকভাবে এ কর্মসূচি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। উদ্বোধনের পর অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার জন্য নিবন্ধন করা যাবে।
রোববার (১৩ আগস্ট) ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিধিমালা-২০২৩’ জারি করা হয়েছে। সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন ২০২৩- এর বিধান অনুযায়ী এ বিধিমালা জারি হয়েছে।
বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে, এ পেনশনে চার ধরণের স্কিম- প্রবাসী, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা রয়েছে। প্রত্যেকে নিজের জন্য প্রযোজ্য স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হবেন, যৌক্তিক কারণ থাকলে স্কিম পরিবর্তন করা যাবে।
প্রবাসী বাংলাদেশির প্রবাসী স্কিম; বেসরকারি চাকুরেরা প্রগতি স্কিম; স্বকর্মে নিয়োজিতরা সুরক্ষা স্কিম এবং স্বকর্মে নিয়োজিত স্বল্প আয়ের নাগরিকরা সমতা স্কিমের আওতায় থাকবে। ৫০ ঊর্ধ্ব নাগরিকও বিশেষ বিবেচনায় স্কিমে যুক্ত হতে পারবেন।
প্রতিটি স্কিমের বিপরীতে মাসিক নির্ধারিত পরিমাণ চাঁদা দিতে হবে। চাঁদাদাতার বয়স ৬০ বছর হওয়া পর্যন্ত চাঁদা দিতে হবে। এরপর নির্ধারিত হারে মাসিক পেনশন পাবেন। কোন স্কিমে এবং কী পরিমাণ চাঁদা দিলে কত টাকা পেনশন পাবেন, সেটা বিধিমালায় উল্লেখ রয়েছে।
জাতীয় পরিচয়পত্র লাগবে স্কিমে নিবন্ধনের জন্য। এনআইডি না থাকলে পাসপোর্ট দিয়ে নিবন্ধন করা যাবে। তবে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে এনআইডি জমা দিতে হবে। অনলাইনে নিবন্ধনের সম্পন্ন শেষে প্রত্যেককে একটি ইউনিক আইডি নম্বর দেওয়া হবে।
অনলাইন ব্যাংকিং, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস, ক্রেডিট কার্ড/ডেবিট কার্ড বা তফসিলি ব্যাংকে চাঁদা জমা দেওয়া যাবে। পর পর তিন মাস চাঁদা জমাদানে ব্যর্থ হলে পেনশন হিসাব স্থগিত হবে। সব বকেয়া পরিশোধ না করা পর্যন্ত স্থগিত থাকবে সেটা। নির্ধারিত পরিমাণ জরিমানাসহ বকেয়া পরিশোধ করলে হিসাব সচল হবে।
কর্মসূচির সুবিধা সমর্পণ সাপেক্ষে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় থাকা ব্যক্তিরাও পেনশন স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। কোনও প্রতিষ্ঠান স্কিমে অংশ নিলে কর্মী এবং প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত চাঁদা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে একত্রে তহবিলে জমা দিতে হবে। চাঁদা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য রেজিস্টার্ড মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।
পেনশন সুবিধা পাওয়ার আগে নিজের, পরিবারের প্রয়োজনে চিকিৎসা, গৃহনির্মাণ, গৃহ মেরামত এবং সন্তানদের বিয়ের জন্য তহবিলে জমাকৃত অর্থের ৫০ শতাংশ ঋণ হিসেবে তোলা যাবে। এ ঋণ সর্বোচ্চ ২৪ কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে। ঋণ শোধের আগে নতুন ঋণ নেওয়া যাবে না। পেনশন প্রাপ্যতা অর্জিত হওয়ার আগে চাঁদাদাতা মারা গেলে মুনাফাসহ জমাকৃত অর্থ ফেরত পাবেন নমিনি বা উত্তরাধিকারী। আর পেনশনে থাকাকালে বয়স ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে মারা গেলেও নমিনি বা উত্তরাধিকারীরা ৭৫ বছর হওয়া পর্যন্ত অবশিষ্ট মাসের মাসিক পেনশন পাবেন।
বিডি/এন/এমকে