আজ ১৫ আগস্ট। জাতীয় শোক দিবস। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের
৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের এ দিনে ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে সপরিবারে
শাহাদতবরণ করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে পৃথিবীর ইতিহাসে এক জঘন্য ও কলঙ্কময় কালো
অধ্যায়ের জন্ম দিয়েছিল বিপদগামী সেনারা।
আজ পুরো জাতি শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ করবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমান ও ১৫ই আগস্টে শহীদ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের। দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোর রাতে সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপথগামী সদস্য ধানমণ্ডির
বাসভবনে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের
হাতে একে একে প্রাণ হারিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব,
বঙ্গবন্ধুর সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল
ও রোজি জামাল। পৃথিবীর এই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর অনুজ
শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত এবং তার ছেলে আরিফ ও সুকান্তবাবু, মেয়ে বেবি,
বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী
আরজু মণি এবং আবদুল নাঈম খান রিন্টু ও কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ সদস্য ও ঘনিষ্ঠজন।
ঘটনার সময় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় তারা প্রাণে
রক্ষা পান।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ১৯৭৫ সালের ২৬শে সেপ্টেম্বর স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট
খোন্দকার মোশ্তাক আহমেদ বিচারের হাত থেকে খুনিদের রক্ষা করতে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স
জারি করেন। পরবর্তীতে ১৯৭৯ সালে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্সকে আইন হিসেবে অনুমোদন করে তৎকালীন
সরকার।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে প্রতিবারের মতো এবারও আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক
ও সামাজিক সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। শোক দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচি পালনে আওয়ামী
লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মী, সমর্থক ও সকল সহযোগী, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক
সংগঠনসমূহের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দিবসটির শুরুতে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গবন্ধু
ভবন ও দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সংগঠনের সর্বস্তরের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা
অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
এ ছাড়া সকাল সাড়ে ৬টায় ধানমণ্ডিস্থ বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও সকাল সাড়ে ৭টায় বনানী
কবরস্থানে ১৫ই আগস্টের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনসহ ফাতেহা পাঠ, মোনাজাত ও
দোয়া মাহফিলের অয়োজন করবে আওয়ামী লীগ। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠনসহ মহানগরের
নেতাকর্মীরা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন। দুপুর ১১টায় টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল
অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধিদল, গোপালগঞ্জ জেলা ও টুঙ্গিপাড়া
উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করবেন।
জাতীয় শোক দিবসকে ঘিরে রাজধানীতে নিরাপত্তা জোরদার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গত কয়েকদিন রাজধানীতে বিশেষ অভিযান চালানো হয়েছে। ডিএমপি’র পক্ষ থেকে বলা
হয়েছে, শোক দিবসে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নেয়া হয়েছে।
আরআই