নীলফামারীতে বদলে গেছে ভূমিহীনদের জীবনযাত্রার মান

নীলফামারী প্রতিনিধি
২৪ অগাস্ট ২০২৩

নীলফামারী সদর উপজেলার লক্ষীচাপ ইউনিয়নের দুবাছুরি গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী ভুবন চন্দ্র রায় এক সময় পৈত্রিক ভিটায় বসবাস করতেন। কিন্তু সময়ে সঙ্গে সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে বিভিন্ন স্থানে বসবাস শুরু করেন। সবশেষে ঠাঁই হয় আকাশকুড়ি গ্রামের বোনের ভিটায়। কিছুদিন আগেও সেই ভিটার এক কোণে পলিথিন দিয়ে ঝুপড়ি ঘর তুলে ভিক্ষা করে কোন রকম দিনাতিপাত করতেন।

কিন্তু এখন সে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। পলিথিনের ঝুপড়ি ঘরে থেকে ভুবন চন্দ্র আশ্রয় পেয়েছেন আধাপাকা ঘরে, সঙ্গে ২ শতক জমির মালিকানা। নিজের চাহিদা ও সংসারের খরচ যোগাতে ঘরের সাথে ফাঁকা জায়গায় বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ  হাঁস মুরগি পালন করছেন। পাশাপাশি পাচ্ছেন প্রতিবন্ধী ভাতাও। ফলে বদলে গেছে তার জীবনযাত্রার মান।

তার মতোই আরেকজন দুস্থ হচ্ছেন পলাশবাড়ী ইউনিয়নের পলাশবাড়ি গ্রামের ময়না বেগম। বিয়ের পর ভালোই চলছিল তার সংসার জীবন। কিন্তু বিরল এক রোগ আক্রান্ত হওয়ার পর এক পা কেটে ফেলতে হয় তার।   অবস্থায় স্বামী তাকে ফেলে আরেকটি বিয়ে করেন। শেষমেষ ময়নার ঠাঁই হয় ভাইয়ের ভিটায়।

সেখানে ছোট একটি ঝুপড়ি ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন তিনি। বর্তমানে তিনিও পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উপহার ২শতক জমিসহ আধাপাকা ঘর। তিনিও ঘরের পাশে ফাঁকা জায়গায় সবজি চাষ হাঁস মুরগি পালন করে সংসার চালাচ্ছেন। 

ভুবন ময়নার মতো খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের প্রতিবন্ধী নুরুল হক, সোনারায় ইউনিয়নের আরমান হোসেন, পলাশবাড়ী ইউনিয়নের পলাশবাড়ী গ্রামের রাবেয়া বেগম, লক্ষীচাপ ইউনিয়নের দুবাছুরি বগুড়া পাড়া গ্রামের শামিম হোসেন, কচুকাটা ইউনিয়নের প্রতিবন্ধী লতা আক্তার, টুপামারি ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়া গ্রামের শাহিন ইসলাম, বাড়াইপাড়ার কৃষ্ণ রায়,পুরাতন স্টেশন গ্রামের শাহিদ আলমসহ অনেক ছিন্নমূল, প্রতিবন্ধী, ভূমিহীন অসহায় ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর পাওয়ার পর বদলে গেছে তাদের জীবনযাত্রার মান। এ ঘর পেতে তাদের সহযোগিতা করেছেন নীলফামারী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন নাহার।

সুফলভোগী শাহিন ইসলাম, প্রতিবন্ধী নূরুল হক, ভবন চন্দ্র, রাবেয়া বেগম,ময়না বেগম জানান, স্বপ্নও ভাবিনি পাকা ঘরে থাকতে পারবো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য আজ আমরা পাকা ঘরে বসবাস করতে পারছি। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পাশাপাশি ঘর পাওয়ার বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দীর্ঘায়ু কামনা করেন তারা।

জানা গেছে, সরকারের এ আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় নীলফামারী সদর উপজেলায় মোট ৭৪৯টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রিয়াজুল ইসলাম জানান, প্রকল্পের সিডিউল অনুযায়ী মানসম্মত উপকরণ দিয়ে প্রতিটি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন নাহার জানান, নিয়মিত তদারকির মাধ্যমে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর উপহারের এসব ঘর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

 

বিডি/রাশেদুল ইসলাম/সি/এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর