নীলফামারীর সৈয়দপুরে হাঁসের গোশত পরিবেশনকে কেন্দ্র করে হোটেলকর্মী ও পিকআপ শ্রমিকদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে শনিবার (২৬ আগস্ট) সকাল থেকে হোটেল-রেস্তোরাঁ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা দিয়েছে হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিক ও কর্মীরা । এ ঘোষণায় শহর ও আশেপাশের আড়াই শতাধিক হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন ভোজন রসিকরা।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) রাতে স্থানীয় তাজির উদ্দিন গ্র্যান্ড হোটেলের মারামারির এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরই হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিক ও কর্মীরা জড়ো হয়ে গভীর রাত পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সড়ক (রংপুর রোড) অবরোধ করেন। পরে পুলিশের আশ্বাসে সড়ক থেকে সরে দাঁড়ায় অবোধকারীরা। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে সৈয়দপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সৈয়দপুরের পিকআপ শ্রমিকদের কয়েকজন ওই হোটেলে খাবার খেতে যান। হাঁসের গোশত ওর্ডার দেন। খাওয়ার পরে এ গোশত নিয়ে হট্টগোল শুরু হয়। হোটেলকর্মীরা দাবি করেন গোশত হাঁসের, বিপরীতে শ্রমিকরা দাবি করেন ব্রয়লার মুরগির গোশত ছিল। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয় উভয় পক্ষের মধ্যে। এরই জেরে পরবর্তীতে আরও কয়েকজন পিকআপ শ্রমিক গিয়ে হোটেলকর্মীদের মারধর ও হোটেলের আসবাবপত্র ভাংচুর করেন।
সৈয়দপুর হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সখেন ঘোষ জানান, হোটেল শ্রমিককে মারধর এবং হোটেল মালিককে হুমকির প্রতিবাদে সৈয়দপুর হোটেল মালিক সমিতি ও হোটেল শ্রমিক সংগঠন যৌথভাবে হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত হোটেল খোলা রাখলে মালিক সমিতি ও হোটেল শ্রমিক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
পিকআপ শ্রমিক ও মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে মুঠোফোনে কয়েকবার চেষ্টা করেও তাদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। নীলফামারী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মমতাজ আলী বলেন, ঘটনাটি মিমাংসার জন্য আমরা আহবান জানালেও হোটেল মালিক-শ্রমিকরা সমঝোতা না করে উল্টো প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে সৈয়দপুরবাসীকে জিম্মি করেছে।
ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি সমাধানের চেস্টা চলছে। এ নিয়ে শনিবার সকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) সারোয়ার আলম ও পরিদর্শক (তদন্ত) মফিজুল হক শহরের পুলিশ বক্সে বসেছিলেন। হোটেল মালিকরা হোটেল খুলতে সম্মত হলেও শ্রমিকরা মেনে না নেওয়ায় কোন সমাধান হয়নি।
বিডি/রাশেদুল ইসলাম/সি/এমকে