আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও নীলফামারীতে তিস্তা নদীর বেশ কয়েকটি পয়েন্ট থেকে দেদারসে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। সারাদিন ইঞ্জিনচালিত নৌকা ব্যবহার করে পাথর উত্তোলন করছে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি চক্র। আইনি ঝামেলা এড়াতে এসব পাথর খালাস হচ্ছে সন্ধ্যার পর থেকে শুরু করে মধ্যরাত অবধি।
উপজেলার ছোটখাতা গোরিং, চর খড়িবাড়ী ও তেলির বাজার চেয়ারম্যান পাড়া এলাকায় সারাদিনে উত্তোলন করা হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ৩০-৪০টির মতো ইঞ্জিনচালিত নৌকায় পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। শ্যালো মেশিনের শব্দ নিয়ন্ত্রনের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে অতিরিক্ত যন্ত্রাংশ। বিকাল হতেই পাথর বোঝাই নৌকা নদীর তীরে ফিরছে। খালাস করা হচ্ছে নদীর কাছারে কিংবা ঝোপঝারে। সেখান থেকে অভিনব কায়দায় বস্তায় ভরে অটোভ্যানে ও মধ্যেরাতে ট্রাক্ট্রারের দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান স্থানীয়রা।
স্থানীয় পাথর ব্যবসায়ী ছাইদার রহমান বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান আছেন। এখানে নিয়মিত থানা পুলিশ আসে, তারা তো কোনো বলতেছে না। আপনার এতো সমস্যা কেন? যদি কারো কিছু করার ক্ষমতা থাকে, তাহলে যেন এসে পাথর উত্তোলন করা বন্ধ করে। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমুলক আচরণ করেন।
আরেক পাথর ব্যবসায়ী আবু হানিফ জানান, কোদাল দিয়ে স্থানীয় কয়েকজন গরীব মানুষ পাথর তুলছে। তাতে সমস্যার কোনো কিছু দেখতেছি না।
ডিমলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুরে আলম সিদ্দিকী জানান, পাথর উত্তোলনের বিষয়ে আমার জানা নেই। খোঁজ খরব নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
প্রসঙ্গত, তিস্তা ব্যারেজ কমান্ড এলাকা ও তিস্তা নদী থেকে পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ২০১৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন (নম্বর ৮০০৮/১৩) করেন ডিমলা উপজেলার ছাতনাই গ্রামের জনৈক গোলাম মোস্তফা। আদালত তার রিট আমলে নিয়ে তিস্তা নদী, তিস্তা ব্যারেজ কমান্ড এলাকা ও ডিমলা উপজেলায় মাটির নিচ থেকে পাথর ও বালু উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। ফলে এলাকাজুড়ে ওই সময় থেকে পাথর ও বালু উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়।
বিডি/রাশেদুল ইসলাম/সি/এমকে