চাটমোহরে অবৈধ জালে আটকা পড়ছে নদী-বিলের মাছ

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

পাবনার চাটমোহরে নদী ও বিলে মাছ শিকার করা হচ্ছে অবৈধ জাল দিয়ে। এসব জালে ধরা পড়া মাছের বেশিরভাগ ছোট আকারের। অথচ আরও কিছুটা সময় পেলে এ মাছের আকার বড় হয়ে উৎপাদন কয়েকগুন বেশি হতো। তাই এখন এসব জালের ব্যবহার প্রতিরোধ করা না গেলে মাছের উৎপাদনের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেছেন সমাজ সচেতন মানুষ।  

স্থানীয় মৎস্য বিভাগ অবশ্য এ অবৈধ জালের ব্যবহার ঠেকাতে তৎপর রয়েছে। বিভিন্ন বিলে অভিযান পরিচালনা করছে তারা, উল্লেখযোগ্য জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে।  কিন্তু জাল পোড়ালেও থেমে নেই মাছ ধরা ও বেচাকেনা।

জানা গেছে, এ বছর চায়না দুয়ারি জাল দিয়ে বর্ষার শুরু থেকেই মাছ ধরা হচ্ছে। তবে পানি নেমে যেতে থাকায় এখন সোঁতিজালও ব্যবহার হচ্ছে চায়না দুয়ারি জালের পাশাপাশি। চায়না দুয়ারি সরাসরি প্রান্তিক জেলেরা ব্যবহার করছেন। সোঁতিজালের সামনে জেলে থাকলেও পেছনে রয়েছে সমাজের কিছু  প্রভাবশালী ব্যক্তি ও রাজনৈতিক দলের স্থানীয় কিছু নেতা। মৎস্য আইনে এ দুই ধরণের জালের ব্যবহারই নিষিদ্ধ।

শুধু মাছের উৎপাদনের ওপরই নয়, রবি ফসলের ফলনের ওপরও সোঁতি জালের ব্যবহার নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন স্থানীয় চাষীরা। তারা বলছেন, পানি প্রবাহের ওপর চায়না দুয়ারির প্রভাব নেই। কিন্তু সোঁতি জালে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হয়, হচ্ছে। ফলে বিলের পানি নামতে দেরি হবে। এতে বিলের আবাদি জমিতে রবি শস্যের আবাদ পিছিয়ে পড়বে।  এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে ফলনের ওপর।

প্রান্তিক জেলেরা বলছেন, এখন পানি নেমে যাচ্ছে। আমরা না ধরলেও ভাটির এলাকার মানুষ ঠিকই এ মাছ ধরবে। তাহলে আমরা ধরবো না কেন? না ধরলে আর্থিক ক্ষতি হবে আমাদের।

ওদিকে উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের আক্কাসের জোলায় দেওয়া সোঁতিজাল কেটে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ধুলাউরি,আগশোয়াইল,টলাটলিপাড়া,রামনগরসহ আশেপাশের কয়েক গ্রামের জেলেরা। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ৩০-৩৫জন জেলে মৎস্য কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করে জাল কেটে দেওয়ার দাবি জানান।  পরে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন।

 

চাটমোহর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আ. মতিন জানান- শানকিভাঙ্গা, বোয়ালমারি, ডিকসি, ছাইকোলা, খলিশাগাড়িসহ আরও কয়েকটি বিলে অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানের সময় এসব বিল থাকা চায়না ‍দুয়ারি জাল আটক করা হয়েছে। সেসব জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। সোঁতিজালের বিরুদ্ধেও দ্রুত অভিযান চালানো হবে। প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক দলের কেউ এর সঙ্গে জড়িত থাকলেও আইন অনুযায়ী সোঁতিজালের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিডি/সি/এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর