নওগাঁর রাণীনগরে ছোট যমুনা নদীর বেড়িবাঁধের নান্দাইবাড়ি ও কৃষ্ণপুর এলাকায় মান্দা উপজেলার আত্রাই নদীর উভয়তীরের বেড়িবাঁধে ছয় জায়গায় ভেঙে গেছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত দেড় হাজার পরিবার। এরই মধ্যে তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার বিঘা জমির আউশ ও আমন ধান। চরম দুর্ভোগে পড়েছে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ। বুধবার ছোট যমুনা নদীর ও তার আগের দিন আত্রাই নদীর বেড়িবাঁধে এ ভাঙন দেখা দেয়।
জানা গেছে, বেড়িবাঁধ ভাঙায় রাণীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়নের নান্দাইবাড়ি, কৃষ্ণপুর, প্রেমতলীসহ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শতাধিক হেক্টর জমির আবাদি ফসল তলিয়ে গেছে। মাঠে থাকা কাঁচা মরিচ, পটল, শীতের সবজি ক্ষতিগ্রস্ত বেশি হয়েছে।
অপরদিকে মান্দা উপজেলায় বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে নুরুল্লাবাদ ইউনিয়নের সাতটি গ্রাম। নুরুল্লাবাদ ও পারনুরুল্লাবাদ এলাকায় ৪শ’ পরিবার এবং ফকিন্নি নদীর তীরবর্তী এলাকায় অন্তত ৬শ’ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্রসাদপুর, বাইবুল্যা ও বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের কয়লাবাড়ী এলাকায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৫শ’ পরিবার।
নুরুল্লাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় তার ইউনিয়নের সাতটি গ্রামের অন্তত ১হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা আঞ্জুমান বানু বলেন, ইতিমধ্যে বন্যা কবলিত এলাকাগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে বালু ভর্তি বস্তা ফেলে মেরামতের কাজ চলছে। বন্যা পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন- বেড়িবাঁধের আর কোথাও যেন নতুন করে ভেঙে না যায়, সেটা পর্যবেক্ষণ করে দ্রুত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতা নিয়ে ভেঙে যাওয়া অংশে বস্তায় বালি ফেলে বন্ধ করার কার্যক্রম চলছে।
নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীর কুমার পাল জানান, ভেঙে যাওয়া অংশগুলো স্ব স্ব উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয়দের সহযোগিতা নিয়ে জিওব্যাগের মাধ্যমে মেরামতের চেষ্ট অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরও জানান, রোববার সকাল থেকে আত্রাই ও ছোট যমুনা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত এ নদীর পানি বেড়ে এখন আত্রাই নদীর শিমুলতলী পয়েন্টে বিপদসীমার ১১৪সেন্টিমিটার, মহাদেবপুর পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার ও জোতবাজার পয়েন্টে ৪১সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বিডি/সি/এমকে