বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি আলোচনায় এসেছে।
দেশটি বাংলাদেশে অবাধ-সুষ্টু নির্বাচনের দাবি করছে। কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি সুষ্ঠু
নির্বাচনের পথে অন্তরায় সৃষ্টি করলে, তারা ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে বলে ঘোষণা দিয়েছে
দেশটি।
এদিকে ভিসানীতি প্রয়োগ শুরু করার ঘোষণা দেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের
রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। তাছাড়া ২২ সেপ্টেম্বর গণমাধ্যমের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা
জানান। এরই প্রেক্ষিতে ২৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক
পরিষদের চিঠি দেয়।
৩০ সেপ্টেম্বর এর জবাব দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত
পিটার হাস। তিনি বলেছেন, গণমাধ্যমকে কেউ মতামত প্রকাশ করা থেকে বিরত রাখার পদক্ষেপ
নিলে তার ক্ষেত্রেও ভিসা নীতি প্রযোজ্য হবে।
চিঠির জবাবে তিনি লেখেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং সাংবাদিকদের অধিকার
দৃঢ়ভাবে রক্ষা করে মার্কিন সরকার।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে উদ্ধৃত করে পিটার
হাস তার চিঠিতে বলেন, সেক্রেটারি ব্লিঙ্কেন ২৪ মে ভিসা নীতি ঘোষণার সময় বলেছিলেন, অবাধ
ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব ভোটার, রাজনৈতিক দল, সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী,
সুশীল সমাজ এবং গণমাধ্যমসহ প্রত্যেকেরই। এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে গণতান্ত্রিক নির্বাচন
প্রক্রিয়ায় তাদের নিজ নিজ ভূমিকা পালনের অনুমতি দিতে হবে।
পিটার হাস বলেন, সেক্রেটারি ব্লিঙ্কেনের বক্তব্য পরিষ্কার ছিল। ভিসানীতি
যেকোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, যিনি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন
প্রক্রিয়াকে দুর্বল করার জন্য দায়ী বা জড়িত থাকবেন। এর মধ্যে তারাও অন্তর্ভুক্ত, যারা
গণমাধ্যমকে মতামত প্রচার করা থেকে বিরত রাখার ব্যবস্থা নেবেন।
সবশেষে মার্কিন রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্র সংবাদপত্রের স্বাধীনতার
প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে। যারা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন
করতে চান তাদের বিরুদ্ধেও দেশটি কথা বলবে এবং ভিসা নীতি প্রয়োগ করবে।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম ই-মেইলে পাঠানো
চিঠিতে লিখেছিলেন, লেখা কিংবা সম্প্রচার করাই হল গণমাধ্যমের কাজ। এখন প্রশ্ন হচ্ছে,
একজন সাংবাদিক যা লেখেন বা সম্প্রচার করেন, তার ওপর ভিত্তি করে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ
করা হবে কি না? যদি তাই হয়, তাহলে এটি কি বাক্স্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার
আওতায় আসে না? গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে এটি কীভাবে ব্যবহার করা হবে? এখানে কোন বিষয়গুলো
বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে?’
আরআই