দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশ-ইংল্যান্ডের লড়াইটা বেশ জমেছিল। এদিন দারুণ বোলিং করেছে শরিফুল মুস্তাফিজরা। যদিও মঈন আলী-জো রুটদের অভিজ্ঞতার সঙ্গে পেরে ওঠেনি। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে চার উইকেটে জিতে যায় ইংলিশরা।
সোমবার (২ অক্টোবর) গোয়াহাটির বারসাপাড়া স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৭ ওভারের ম্যাচে ৯ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১৮৮ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাবে ৭৭ বল হাতে রেখেই ছয় উইকেটের জয় তুলে নেয় ইংল্যান্ড।
তানজিদ তামিম। এই দুই ব্যাটারের ব্যাটিং দৃঢ়তায় বেশ ভালোই এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। ৫২ রানের জুটি গড়ে শুরুর চাপ সামাল দিয়ে দলকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছিল এই জুটি। তবে দলীয় ৭৮ রানের মাথায় মার্ক উডের বলে ইনসাইড এজ বোল্ড হয়ে ফেরেন তামিম। আউটের আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৪৪ বলে ৪৫ রান।
তামিমের বিদায়ের পর মুশফিককে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন মিরাজ। যদিও সেই জুটি অবশ্য খুব একটা বড় হয়নি। দলীয় ১০৪ রানের মাথায় আদিল রশীদের ব্যাক অফ লেন্থ ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে ফেরেন মুশফিক। নির্ভরযোগ্য এই ব্যাটারের ব্যাট থেকে আসে ১৫ বলে আট রান।
বাংলাদেশ ১৮৭ রান করলেও বৃষ্টি আইনে ইংলিশদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৯৭ রান। ৩৭ ওভারের ম্যাচে যে রান তাড়া মোটেও সহজ নয়। কিছুটা তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে দলীয় ৯ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। মুস্তাফিজের বলে স্লিপে তামিমের হাতে ধরা পড়েন দাভিদ মালান।
তার বিদায়ে পর হ্যারি ব্রুককে নিয়ে মারকুটে ব্যাটিং করেন আরেক ওপেনার জনি বেয়ারস্টো। মাত্র চার ওভারেই স্কোরবোর্ডে ৫০ রান তুলে ফেলে ইংল্যান্ড। দলীয় ৫১ রানের বেয়ারস্টোকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে কিছুটা স্বস্তি এনে দেয় মুস্তাফিজ। ২১ বলে ৩৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
এরপর দলীয় ৭৩ রানের হ্যারি ব্রুক ও ১০৭ রানে বাটলারকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে লড়াইয়ে ফেরান শরিফুল ও হাসান। যদিও ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে মঈন আলী ও জো রুট মিলে চাপ সামাল দিয়ে দারুণ ব্যাটিং করেন। বাংলাদেশের বোলারদের পাত্তা না দিয়ে দলকে জয়ের ভিত গড়ে দেন। দলীয় ১৯৩ রানে মঈন ফিরলেও ততক্ষণে জয়ের খুব কাছাকাছি ইংল্যান্ড। এরপর ওকসকে নিয়ে বাকি কাজটা সারেন রুট।
এর আগে, প্রথম ওভারে ১৩ রান তুলে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দেন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। যদিও লিটন দাস পারেননি আস্থার প্রতিদান দিতে। দলীয় ১৮ রানের মাথায় রিচ টপলির লাফিয়ে ওঠা বলে খোঁচা মারতে গিয়ে উইকেটের পেছনে বাটলারকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন। ছয় বলে পাঁচ রান আসে এই ডানহাতির ব্যাট থেকে। লিটনের পর ক্রিজে এসে থিতু হতে পারেননি অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। এবারও বোলিংয়ে ছিলেন সেই টপলি। দলীয় ২৬ রানে টপলির ফুলার লেন্থ ডেলিভারিতে অ্যাটকিনসনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শান্ত। ১১ বল খেতে মাত্র দুই রান করেন শান্ত।
এরপর মেহেদী মিরাজকে নিয়ে জুটি গড়েন তানজিদ তামিম। এই দুই ব্যাটারের ব্যাটিং দৃঢ়তায় বেশ ভালোই এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। ৫২ রানের জুটি গড়ে শুরুর চাপ সামাল দিয়ে দলকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছিল এই জুটি। তবে দলীয় ৭৮ রানের মাথায় মার্ক উডের বলে ইনসাইড এজ বোল্ড হয়ে ফেরেন তামিম। আউটের আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৪৪ বলে ৪৫ রান।
মুশফিকের বিদায়ের পর মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেওয়ার কাজটা করতে থাকেন মিরাজ। তবে, মুশফিকের মতো মাহমুদউল্লাহও পারেননি বড় ইনিংস খেলতে। দলীয় ১৩৮ রানের মাথায় রশীদের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন রিয়াদ। রশীদের ডেলিভারিতে তুলে মারতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে লিভিংস্টোনের হাতে ধরা পড়েন মাহমুদউল্লাহ। ২১ বলে ১৮ রান আসে তার ব্যাট থেকে।এরপরই ম্যাচের ৩০তম ওভারে নামে বৃষ্টি।
প্রায় ঘন্টা তিনেকের অপেক্ষা শেষে বৃষ্টি থামলে খেলা নেমে আসে ৩৭ ওভারে। যদিও পরের ব্যাটাররা বৃষ্টির পর খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। দলীয় ১৭৩ রানের ৮৯ বলে ৭৪ রানের ইনিংস খেলে বোল্ড হয়ে ফেরেন মিরাজ। এরপর দ্রুতই বাকি ব্যাটারদের হারায় বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ : ৩৭ ওভারে ১৮৮/৯ (তানজিদ তামিম ৪৫, লিটন ৫, শান্ত ২, মিরাজ ৭৪, মুশফিক ৮, মাহমুদউল্লাহ ১৮, হৃদয় ৫, মেহেদি ৩, নাসুম ০, তাসকিন ১২*, শরিফুল ৩*; টপলি ৫-১-২৩-৩, কারান ৫-০-২৩-১, উইলি ৫-১-২৬-২, ওকস ৫-০-২৫-০, উড ৩-০-৯-১, আটকিনসন ৫-০-৩১-০ রশীদ ৫-১-২৭-২, লিভিংস্টোন ২-০-১৭-০, মঈন ২-০-৭-০)।
ইংল্যান্ড : ২৪.১ ওভারে ১৯৭/৬ (বেয়ারস্টো ৩৪, মালান ৪, রুট ২৬, ব্রুক ১৭, বাটলার ৩০, লিভিংস্টোন ৭, মঈন ৫৬, ওকস ১; মুস্তাফিজ ৩-০-২৩-২, হাসান ৪-০-৩৮-১, শরিফুল ৩-০-৩২-১, তাসকিন ৪-০-২৩-১, সাকিব ৪-০-৩০-০, মেহেদী ২-০-১০-০, মাহমুদউল্লাহ ২.১-০-১৬-০, নাসুম ২-০-২০-১)