গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওষুধ পেতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগীরা। কাগজে কলমে এ হাসপাতালে দু’জন ফার্মাসিস্ট থাকলেও বাস্তবে একজন ফার্মাসিস্ট দিয়ে ওষুধ বিতরণ সেবা চালু রাখা হয়েছে। ফলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

হাসপাতালের আরেক ফার্মাসিষ্ট আশরাফুল আলম স্বপন পাঁচ বছর ধরে ডেপুটেশেনে রয়েছেন। নিয়ম ভেঙে দীর্ঘদিন ডেপুটেশনে থাকলেও কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ।

জানা গেছে, চলনবিলের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত হওয়ায় উপজেলার প্রায় ৩ লাখ মানুষ ছাড়াও আশপাশের সিংড়া, বড়াইগ্রাম, তাড়াশ ও চাটমোহর উপজেলার বহু রোগী এ হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন।

প্রতিদিন প্রায় ৬শ’ রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেন। কিন্তু জনবল সংকটে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।

হাসপাতালে আসা অন্তঃসত্ত্বা আলেয়া বেগম, ষাটোর্ধ খইমন বেওয়াসহ অন্তত দশজন রোগী বলেন, ওষুধ নিতে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু এখনো ওষুধ পাইনি। তাদের মতো রোগীদের লাইনে দাঁড়িয়ে ওষুধ নেওয়া কষ্টসাধ্য ব্যাপার।

হাসপাতালে কর্মরত ফার্মাসিস্ট নাজমুল হাসান জানান, প্রতিনিদিই ফার্মাসীর সামনে রোগীর ভীড় জমে। বৈকালিক স্বাস্থ্য সেবা, প্রবীণ স্বাস্থ্য সেবা ও চক্ষু রোগীদের সেবা চালু থাকায় বেড়েছে রোগীর চাপ।

ফার্মেসিতে তিনি একা হওয়ায় রোগীদের ওষুধ দিতে হিমশিম খেতে হয় তাকে। একই সাথে ওষুধ নিতে প্রতিদিন রোগীদের লাইনে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়।

ডেপুটেশনে থাকা ফার্মাসিস্ট আশরাফুল আলম ভোগান্তির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, বৃদ্ধ পিতা-মাতার সেবা করার লক্ষ্যেই তিনি বছর পাঁচেক আগে ডেপুটিশেন নিয়ে নিজের এলাকায় দায়িত্ব পালন করছেন।

গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ সময় ডেপুটেশনে থাকার বিধান নেই। ফার্মাসিস্ট আশরাফুল আলমের অনুপস্থিতির কারণে একজন ফার্মাসিস্ট দিয়ে রোগীদের ওষুধ সরবরাহ করা কষ্টকর। ওই ফার্মাসিস্টকে অন্যত্র বদলি করে নিয়মিত ফার্মাসিস্ট পদায়ন অথবা ডেপুটেশন বাতিলের বিষয়ে তিনি উর্ধতন কর্তৃপক্ষে জানাবেন।

নাটোরের সিভিল সার্জন মশিউর রহমান জানান, খোঁজ নিয়ে তিনি এব্যপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

বিডি/সাজেদুর রহমান সাজ্জাদ/সি/এমকে