দীপক কুমার সরকার, বগুড়া:
বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার দুই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বামীর সঙ্গে স্ত্রী ও সহোদর দুই ভাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের একজন আওয়ামী লীগ সমর্থিত, বাকিরা স্বতন্ত্র। তাদের প্রত্যেকেই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী, ভোটের দিন পর্যন্ত নির্বাচনি মাঠে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। ভাই-ভাই ও স্বামী-স্ত্রী প্রার্থী হওয়ায় তাদের জয় নিয়ে ইউনিয়ন দু’টিতে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। এ দুই ইউপিসহ উপজেলার মোট ৭ ইউপিতে ভোট হওয়ার কথা রয়েছে ৩১ জানুয়ারি।
স্বামী-স্ত্রী ও দুই ভাই প্রার্থী হওয়া ইউনিয়ন দুটি হচ্ছে- উপজেলা সদর ও দিগদাইড়। সদর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন মোট তিন জন। এরা হলেন- আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুল আলম বুলু (নৌকা), স্বতন্ত্রী প্রার্থী জাকির হোসেন বেলাল (আনারস) ও তার স্ত্রী রোখসানা বেগম (চশমা)।
অন্যদিকে দিগদাইড় ইউনিয়নের প্রার্থীরা হলেন- সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম মোশারফ হোসেন বুলু মন্ডলের ছেলে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আলী তৈয়ব শামীম (নৌকা) এবং তার সহোদর ভাই একই ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোস্তাক আহমেদ তরুন (আনারস), জোড়গাছা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও সৈয়দ আহমদ কলেজ স্টেশন আঞ্চলিক বিএনপির সাবেক সভাপতি সহিদুল হক টুল্লু (মোটরসাইকেল) এবং দিগদাইড় ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহফুজার রহমান (ঘোড়া)।
রোখসানা বেগম ছাড়া বাকি সব প্রার্থীর পোষ্টারে নির্বাচনি এলাকা ছেয়ে গেছে, প্রচারণাও চোখে পড়ছে। আলী তৈয়ব শামীম বলেন, গত পাঁচ বছরে দলমত নির্বিশেষে সাধ্য মতো ইউনিয়নের উন্নয়ন কাজ করেছি। জনগণ আবারও ভোট দিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করলে অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করার পাশাপাশি নতুন উন্নয়ন কাজ হাতে নিতে পারবো। মোস্তাক আহমেদ তরুণ বলেন, ভোটাররা যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করবেন। নির্বাচিত হতে পারলে দলমত নির্বিশেষে এলাকার সবার জন্য কাজ করবো। এছাড়া তিনিও তার মরহুম বাবা সাবেক চেয়ারম্যান বুলু মন্ডলের স্বপ্ন পূরণ করতে চান বলে জানিয়েছেন।
অন্যদিকে জাকির হোসেন বেলাল বলেন, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা গণতান্ত্রিক অধিকার। জনগণের জনপ্রিয়তা এবং নির্বাচনে যে বিজয় হবে, সেই চেয়ারম্যান। স্বামী-স্ত্রী প্রার্থী হয়ে ভোটারদের কাছে ভোট চাওয়া প্রসঙ্গে বলেন, মূলত আমার জন্যই ভোট চাওয়া। আমার প্রতিদ্বন্দ্বি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এলাকায় নানা ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে। যদি প্রতিপক্ষ কোনও হয়রানি, ষড়যন্ত্র বা মিথ্যাভাবে মামলা করে আমাকে জেলে পাঠায়, সেক্ষেত্রে আমার স্ত্রী যেন ভোট করতে পারে। এটা আমার কৌশল মনে করতে পারেন। তবে শেষ পর্যন্ত আমরা দু’জনই মাঠে থাকবো। রোকসানা বেগম বলেন, আমার স্বামীকে যেমন ইউনিয়নবাসী ভালোবাসে, ঠিক তেমনি আমাকেও ভালোবাসে। তাই দু’জনই প্রার্থী হয়েছি। মানুষ ভোট দিয়ে যাকে নির্বাচিত করবে, সেই চেয়ারম্যান হবে। পোস্টার দেখতে না পাওয়া প্রসঙ্গে বলেন- পোস্টার তৈরির জন্য অর্ডার দেওয়া আছে। সম্পন্ন হয়ে হাতে আসলে পোস্টার ঝুলানো হবে ।
উপজেলা রিটার্নিং অফিসার আছিয়া খাতুন ও নির্বাচন অফিসার আশরাফ আলী জানান, এ দুই ইউনিয়নে এ পর্যন্ত কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
এমকে