বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে
নিউজিল্যান্ড। এ জয়ের মাধ্যমে গত বিশ্বকাপে হারের প্রতিশোধ নিল ব্লাক ক্যাটরা। গেল
বিশ্বকাপে যাদের কাছে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল, সেই ইংল্যান্ডকে হারিয়েই এবারের আসরে শুভসূচনা
করল কিউইরা।
ওয়ানডে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে বৃহস্পতিবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের
মুখোমুখি হয় নিউজিল্যান্ড।
আহমেদাবদে এদিন আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ
৯ উইকেটে ২৮২ রান। জবাবে ৮২ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় নিউজিল্যান্ড। ৩৬.২ ওভারে মাত্র
এক উইকেট হারিয়ে ২৮৩ রান তোলে কিউইরা।
নিউজিল্যান্ড ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই উইল ইয়ংকে শূন্য রানে ফেরান
স্যাম কারান। ইংলিশরা তখন দূর কল্পনাতেও ভাবতে পারেনি এরপর কতটা বাজে সময় অপেক্ষা করছে
তাদের জন্য। পরের গল্পটা শুধুই নিউজিল্যান্ডের। ১০ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর ডেভন
কনওয়ে ও রাচিন রবীন্দ্রের অবিচ্ছিন্ন ২৭৩ রানের জুটিতে জয় তুলে নেয় তারা।
দলের জয়ে সেঞ্চুরি করেছেন কনওয়ে ও রবীন্দ্র দুজনই। ৮৩ বলে কনওয়ে এবং ৮২
বলে শতরানের দেখা পান রবীন্দ্র। ১৯ চার ও তিন ছক্কায় ১২১ বলে অপরাজিত ১৫২ রানের দুর্দান্ত
ইনিংস উপহার দিয়েছেন কনওয়ে। তার সঙ্গী রবীন্দ্র খেলেছেন ৯৬ বলে অপরাজিত ১২৩ রানের চমৎকার
ইনিংস। রবীন্দ্রের ইনিংসটি সাজানো ছিল ১১ চার ও পাঁচ ছয়ে।
এর আগে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নামে ইংল্যান্ড। ব্যাট হাতে শুরুটা খারাপ
হয়নি বিশ্বসেরাদের। আগে ব্যাট করতে নেমে ছয় দিয়ে শুরু করেছে ইংল্যান্ড। এরপর দুই ওপেনার
ডেভিড মালান ও জনি বেয়ারস্টো মিলে এগিয়ে নিচ্ছিলেন দলকে। তবে, দলীয় ৪০ রানে ম্যাট হেনরির
বলে উইকেটের পেছনে লাথামকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মালান (১৪)। ৩৫ বলে ৩৩ করা বেয়ারস্টোকে
ডেরিল মিচেলের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান মিচেল স্যান্টনার।
চারে ব্যাট করতে নামা হ্যারি ব্রুক বেশ দ্রুতগতিতে শুরু করেছিলেন নিজের
ইনিংস। ১৬ বলে ২৫ রান করে রাচিন রবীন্দ্রের বলে ডেভন কনওয়ের তালুবন্দী হন তিনি। মঈন
আলিকে (১১) বোল্ড করে ইংরেজদের রানের চাকা কিছুটা শ্লথ করে দেন গ্লেন ফিলিপস। এরপর
দ্রুত কয়েক উইকেট হারালেও রানের চাকা সচল রাখে ইংল্যান্ড।
জো রুট ও জস বাটলার মিলে পঞ্চম উইকেটে ৭০ রানের জুটি গড়ে বিপর্যয় সামাল
দিতে চেষ্টা করেন। বাটলারের নিজের শিকারে পরিণত করে জুটি ভাঙেন হেনরি। ইংলিশ অধিনায়ক
বাটলার ৪৩ রান করে ফিরলেও রুট তুলে নেন অর্ধশতক। ৮৬ বলে ৭৭ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলা
রুটকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান ফিলিপস।
শেষ দিকে লিয়াম লিভিংস্টোন আদিল রশিদ, স্যাম কারানদের ছোট ছোট ইনিংসে ভর দিয়ে ২৮২ রান করে ইংল্যান্ড।
কিন্তু, এটিকে মামুলি লক্ষ্য বানিয়ে হেসেখেলে জয় তুলে নেয় নিউজিল্যান্ড।
নিউজিল্যান্ডের পক্ষে তিন উইকেট শিকার করেন হেনরি। দুটি করে উইকেট পান স্যান্টনার
ও ফিলিপস।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ইংল্যান্ড : ৫০ ওভারে ২৮২/৯। (বেয়ারস্টো ৩৩, মালান ১৪, রুট ৭৭, ব্রুক ২৫,
মঈন ১১, বাটলার ৪৩, লিভিংস্টোন ২০, কারান ১৪, ওকস ১১, রশিদ ১৫*, উড ১৩*; বোল্ট ১০-১-৪৮-১,
হেনরি ১০-১-৪৮-৩, স্যান্টনার ১০-০-৩৭-২, নিশাম ৭-০-৫৬-০, রাচিন ১০-০-৭৬-১, ফিলিপস ৩-০-১৭-২)
নিউজিল্যান্ড : ৩৬.২ ওভারে ২৮৩/১। (কনওয়ে ১৫২* ইয়ং ০, রাচিন ১২৩*; ওকস ৬-০-৪৫-০,
কারান ৬-২-৪৭-১, উড ৫-০-৫৫-০, মঈন ৯.২-০-৬০-০, রশিদ ৭-০-৪৭-০, লিভিংস্টোন ৩-০-২৪-০)
ফলাফল : নিউজিল্যান্ড ৯ উইকেটে জয়ী।