বক্সঅফিসে ঝড় তুলে সেপ্টেম্বর মাসের ৭ তারিখে মুক্তি পায় ‘জওয়ান’। এই সিনেমার গল্প ও শাহরুখের প্রশংসায় পঞ্চমুখ দর্শক থেকে সমালোচক সবাই। এ বার জওয়ান দেখার পর শাহরুখকে খোলা চিঠি লিখলেন ভারতের গোরক্ষপুরের চিকিৎসক কাফিল খান। তিনি জানালেন জাওয়ান সিনেমায় দেখানো গল্প মিথ্যে নয় বাস্তবেও ঘটেছে এমন কিছু।
এই সিনেমায় কৃষকদের ঋণ, সেনাবাহিনীতে অস্ত্র কেলেঙ্কারি, আর্থিক দুর্নীতি, কালো টাকার এই সব সামাজিক অবক্ষয়ের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। এছাড়া হাসপাতালে শিশু মৃত্যুর যে গল্প রয়েছে সিনেমায় তা কাল্পনিক হলেও বাস্তবেও এমন ঘটনা ঘটেছিল গোরক্ষপুর হাসপাতালে। ২০১৭ সালে ওই হাসপাতালে ১৩১৭ জন শিশু মৃত্যুর ঘটনার সম্পূর্ণ দায়ভার গিয়ে পড়েছিল দায়িত্বপ্রাপ্ত ডাক্তার কাফিল খানের উপর। তাকেও গ্রেফতার হতে হয়ছিল।
কিন্তু বছর ছয়েক আগে যখন গোরক্ষপুর হাসপাতালে এমন অক্সিজেন সঙ্কট দেখা দেয় কাফিল নিজের চেষ্টায় অক্সিজেন সংগ্রহ করে শিশুদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকেই জেলে যেতে হয়। পর্দাতেও ঠিক তেমনটাই দেখানো হয়েছে। পর্দায় আসল দোষীরা শাস্তি পেলেও বাস্তবে এখনও পর্যন্ত কাফিল কোনও সুবিচার পাননি। ছবিতে এই ঘটনা তুলে ধরার জন্য শাহরুখ এবং ছবির নির্মাতা অ্যাটলিকে তাই চিঠি লিখে ধন্যবাদ জানিয়েছেন চিকিৎসক।
সমাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শাহরুখের উদ্দেশে কাফিল লিখেছেন, ‘‘আমি আপনাকে মেল করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু পারিনি। আমি আপনাকে চিঠিও পাঠিয়েছিলাম। তার কোনও উত্তর পাইনি। তাই সমাজমাধ্যমকেই বেছে নিলাম কিছু কথা বলার জন্য।’’ তিনি আরও লেখেন, ‘‘আমি সম্প্রতি ‘জওয়ান’ দেখলাম। ছবির মাধ্যমে সামাজিক সমস্যাগুলিকে যে ভাবে তুলে ধরেছেন, তার জন্য আপনাকে এবং গোটা টিমকে আমার কুর্নিশ। ছবির গল্প কাল্পনিক হলেও শিশুমৃত্যুর ঘটনা যে ভাবে তুলে ধরা হয়েছে, তা আমাদের দেশের চিকিৎসাব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। পর্দায় দোষীরা শাস্তি পেলেও, বাস্তবে তা হয়নি। আমি এখনও আমার চাকরি ফিরে পাওয়ার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। শুধু তাই নয়, যারা সন্তান হারিয়েছেন তারাও কোনও ন্যায়বিচার পাননি। আমি একটি বই লিখেছি। গোটা ঘটনাটি সেখানেই তুলে ধরেছি। লড়াই যতই কঠিন হোক দেশের প্রতি আমার ভালবাসা, ভক্তি, পবিত্রতা এবং সংকল্প অবিচল থাকবে। ধন্যবাদ। আপনার উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম।’