রাণীনগরে ইউএনওসহ ১৭ দফতরে ৯০ পদ ফাঁকা

আবু ইউসুফ, নওগাঁ প্রতিনিধি
১২ অক্টোবর ২০২৩

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় ইউএনওসহ ১৭টি সরকারি দফতরে ৯০ পদ দীর্ঘদিন ধরে ফাঁকা রয়েছে। এতে একদিকে যেমন স্থবির হয়ে পরেছে উপজেলা প্রশাসনের কার্যক্রম, অন্যদিকে সেবা পেতে ভোগান্তিতে পড়েছেন উপজেলাবাসী। যদিও দফতর প্রধানের পদে ভারপ্রাপ্ত কিম্বা অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ দফতর পরিচালিত হচ্ছ।

জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি পদ ফাঁকা আছে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স। এর আওতায় উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পদ ফাঁকা রয়েছে ৩৯টি।  উপজেলা সাব-রেজিট্রার, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পরিসংখ্যান কর্মকর্তার পদ ফাঁকা ছাড়াও প্রাথমিক শিক্ষা দফতরে একজন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাসহ চারটি পদ, প্রাণীসম্পদ দফতরে ভেটেরিনারী সার্জনসহ পাঁচটি পদ, এলজিইডি দফতরে ১১টি পদ, যুব উন্নয়ন দফতরে দুইটি পদ, সমবায় দফতরে দুইটি পদ, মহিলা বিষয়ক দফতরে একটি পদ, সমাজ সেবা দফতরে ছয়টি পদ, নির্বাচন অফিসে একটি পদ, কৃষি অফিসে ছয়টি পদ, খাদ্য নিয়ন্ত্রক দফতরে তিনটি পদ ও মৎস্য দফতরে তিনটি পদ ফাঁকা।

দফতরগুলো থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন গত সেপ্টেম্বর বদলি হয়ে গেছেন। এরপর থেকে পদটি ফাঁকা হয়ে যায়। অবশ্য এর এক মাসের মাথায় নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম রবিন শীষকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ এবং উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পদের মধ্যে জুনিয়র কন্সালটেন্ট মেডিসিন, সার্জারী, এ্যানেসথেসিয়া, চক্ষু, অপথালমোলজি, ইএনটি, কার্ডিওলজি, অর্থোপেডিক্স, আবাসিক মেডিকেল অফিসার এবং উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের তিনজন মেডিকেল অফিসারসহ ৩৯টি পদ ফাঁকা রয়েছে। এতে চরমভাবে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে।

সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সমিতির সভাপতি হাফিজুর রহমান বাচ্চু জানান, আড়াই বছর ধরে সাব-রেজিস্ট্রারের পদ ফাঁকা। বিভিন্ন উপজেলা থেকে সাব-রেজিস্ট্রার এখানে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সপ্তাহে দুই দিন বা সপ্তাহে একদিন অফিস করছেন অতিরিক্ত দায়িত্বের সাব রেজিষ্ট্রার। ফলে জমি ক্রেতা-বিক্রেতারা চরম বেকায়দায় পড়েছেন।

উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তার পদ ফাঁকা তিন বছর ধরে। তার পদে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কর্মকর্তা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে আসছেন। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার পদ ফাঁকা চার মাস ধরে। সেখানে গত ১ জুন থেকে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

পারইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান জাহিদ বলেন, ইউএনও না থাকার কারণে টিআর, কাবিখা, কাবিটাসহ বিভিন্ন প্রকল্পের বিলে স্বাক্ষর হচ্ছে না। ফলে বিলও উত্তোলন করতে পারছি না। এছাড়া এডিপির প্রকল্প টেন্ডারেও জটিলতা হচ্ছে। আমরা চরম বেকায়দায় রয়েছি।

উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার কামরুল হাসান বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা না থাকায় বিভিন্ন বিদ্যালয়ের এমপিও, নিয়োগ এবং নিয়মতি মনিটরিং কার্যক্রমে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। 

নওগাঁ জেলা রেজিস্টার শরিফ উদ্দীন বলেন, জেলাজুড়ে পাঁচজন সাব-রেজিস্টার রয়েছে। পাঁচজনকে দিয়ে পুরো ১১ উপজেলা পরিচালনা করতে হচ্ছে। জনবলের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই এ সমস্যা সমাধান হবে বলে আশা করছি।

নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা. আবুহেনা মোহাম্মদ রায়হানুজ্জামান সরকার বলেন, শুন্যপদ ফিলাপের জন্য আমরা চাহিদা পাঠিয়েছি। আশা করছি দ্রুতই জনবল পাওয়া যাবে।

নওগাঁ জেলা প্রশাসক গোলাম মওলা বলেন, আপাতত রাণীনগরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নওগাঁ সদর উপজেলার ইউএনওকে। আগামী ১৫ তারিখের মধ্যে সেখানে নিয়মতি একজন ইউএনওকে পদায়ন করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি

 

বিডি/সি/এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর