পতিত বিলে ভাসমান বেডে সবজি চাষ

উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
১৩ অক্টোবর ২০২৩

কুড়িগ্রামের উলিপুরে পতিত বিলে ভাসমান বেডে সবজি চাষ করছেন স্থানীয় চাষীরা। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি পরিস্থিতিতে এ আবাদে একদিকে মিটছে তাদের পরিবারের চাহিদা, অন্যদিকে উদ্বৃত্ত সবজি বিক্রি করে বাড়তি আয় করছেন তারা।

কচুরিপানা পঁচিয়ে বেড তৈরি করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাষীদের কারিগরি সহায়তা প্রদান করছেন। পদ্ধতির আবাদে সবজির ফলন অনেক ভালো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চাষীরা।

ভাসমান বেডে সবজি চাষে রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয় না। কোনো কীটনাশকও দিতে হয় না। ফলে সম্পূর্ণ বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন হচ্ছে বলে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি অফিস।

উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৭টি ইউনিয়নে ২১টি প্রদর্শনীর আওতায় ৮৪টি ভাসমান সবজি চাষ করা হয়েছে। প্রদর্শনীর আওতায় চাষীদের বিনামূল্যে বীজ, বেড তৈরির খরচ বিভিন্ন ধরণের কৃষি উপকরণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, পতিত বিলে পানির ওপরে লম্বালম্বিভাবে দুটি বাঁশ কলাগাছ ফেলে ভাসমান বেড তৈরি করেছেন চাষিরা। তারা বলছেন, বেডের ওপর কুচুরি পানা শেওলার স্তুপ করা হয় প্রথমে। এরপর এ স্তুপ পঁচার পর শুকিয়ে গেলে তার ওপর সামান্য মাটি ছিটিয়ে দেওয়া হয়। - দিন পরেই ওই ভাসমান বেডের ওপর চাষ করছেন পুঁইশাক, মিষ্টি কুমড়া, লাল শাক, পালংশাক, কলমি শাক, ঢেঁড়শ, বরবটি, লাউ, মসলা সিম। মাসখানেকের মধ্যেই সবজি বাজারজাতের উপযোগী হয়ে যায়।

ধরনিবাড়ি ইউনিয়নের কিশামত মধুপুর কেকতির পাড় গ্রামের ভাসমান সবজি চাষি এনামুল বলেন, চারটি করে বেড তৈরি করতে খরচ হয়েছিল প্রায় হাজার টাকা। পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা পুরণ করার পরেও প্রায় হাজার টাকার সবজি বাজারে বিক্রি করেছেন। তাতে প্রায় হাজার টাকা বাড়তি আয় হয়েছে তার।

উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা শাহাজাহান জানান, ভাসমান বেডে সবজি চাষ করতে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের প্রদর্শনী হিসেবে ভাসমান বেডে দেওয়া হচ্ছে। চাষিদের প্রশিক্ষণ বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়ে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এছাড়াও বেড তৈরি করতে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোশারফ হোসেন বলেন, পতিত পকুর, খাল বিলে ভাসমান বেডে সবজি চাষে দিন দিন কৃষকরা আগ্রহী হচ্ছেন। কৃষকরা সবজির উচ্চমূল্য পাওয়ার পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হচ্ছে। আগামীতে উপজেলায় ভাসমান বেডে সবজি চাষ আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠবে বলে আশা করেন।

 

বিডি/রোকন মিয়া/ সি/এমকে

           


মন্তব্য
জেলার খবর