পঞ্চগড়ে সরকারের সাড়ে ৫২ মেট্রিক টন গম আত্মসাত

মো. সম্রাট হোসাইন, পঞ্চগড় থেকে
১৬ অক্টোবর ২০২৩

 

পঞ্চগড়ে আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের জায়গায় মাটি ভরাটের জন্য বরাদ্দ দেওয়া সাড়ে ৫২মেট্রিক টন খাদ্যশস্য (গম) আত্মসাৎ করা হয়েছে।

তৎকালীন সদর উপজেলার ইউএনও মো.আরিফ হোসেন ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো.জাকির হোসেন পরস্পরের যোগসাজশে এ গম আত্মসাত করেছেন।বাংলাদেশ২৪ অনলাইন-এর অনুসন্ধানে এমন তথ্য জানা গেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের গয়পানিদীঘি গ্রামে ঘর নির্মাণের মাটি ভরাটের জন্য এ বরাদ্দ দেওয়া হয় ২০২০-২১ অর্থবছরে। কিন্তু সেখানে কোনো মাটি ভরাট করা হয়নি। এমনকি প্রকল্পের সভাপতি জানেন না তার নামে প্রকল্প দেওয়া হয়েছে। এনিয়ে বিস্মিত হওয়ার পাশাপাশি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। বরাদ্দ দেওয়া গমের  বাজার মূল্য ছিল প্রায় ২০ লাখ টাকা।

বর্তমানে ওই ইউএনও নাটোর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি শাখার দায়িত্বে,প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তেঁতুলিয়া উপজেলার দায়িত্বে রয়েছেন।

তথ্য সূত্রে জানা যায়, এ প্রকল্পের আওতায় ওই অর্থবছরের গয়পানিদীঘি এলাকার পাশাপাশি সোনারবান আবাসনে-৩০.৮৭৫ মেট্রিক টন ও নালাগঞ্জে-২৪.৫০০ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য (গম) উপ-বরাদ্দেশ জারি করা হয়। সদর উপজেলার আবাসন প্রকল্পে জেলা প্রশাসক উপজেলা পর্যায়ের চাহিদার বিপরীতে এ বরাদ্দ দেন। এর মধ্যে গয়পানিদীঘি ছাড়া বাকি প্রকল্পে কম-বেশি মাটি ভরাট করা হয়েছে। কিন্তু গয়পানিদিঘী নামের আবাসন প্রকল্পে কোন মাটি ভরাট না করেই পুরো অর্থ লোপাট করা  হয়েছে বলে জানান সেখানকার বাসিন্দারা।

গয়পানিদিঘী আবাসন প্রকল্প এলাকার হবিবর রহমান জানান,কয়েক বছর আগে পুকুরটি খুঁড়ে চতুরপাশে পাড় বেঁধে দেওয়া হয়। সেখানে আমরা বাড়ি করি। অনেকে এখান থেকে মাটি দুরে নিয়ে গেছে। ঘরের জায়গায় আধাপাকা ঘর করে দিয়েছেন। কিন্তু কোন মাটি ভরাট করতে হয়নি।

একই কথা বলেন, প্রকল্প এলাকার আল আমিন,সাবিনা,পারুলসহ একাধিক ব্যক্তি।

গয়পানিদিঘী আবাসন প্রকল্পে মাটির কাজ বাস্তবায়নের সভাপতি তৎকালীন চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন জানান,ওই এলাকা উঁচু। সেখানে মাটি ফেলার কোন প্রয়োজন নেই। এমনিতেই ঘর নির্মান করা হয়েছে। নিজে প্রকল্পের সভাপতি কথা শুনে অবাক হন তিনি।

তৎকালীন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো.জাকির হোসেন জানান,

আমি সেখানে অতিরিক্ত দায়িত্বে ছিলাম। কাজ করছেন কি-না ইউএনও স্যার,আর প্রকল্প অফিসের কার্য সহকারী আবু হানিফ বলতে পারবেন। তবে আবু হানিফ জানান, ইউএনও স্যার ওই প্রকল্প এলাকার কিছু মানুষকে দুই হাজার, পাঁচ হাজার করে টাকা দিয়েছিল ঘরে মাটি ভরাট করার জন্য।

তৎকালীন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বর্তমান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নাটোর,মো.আরিফ হোসেন জানান,ওই বিষয়ে আপনাকে বলার মতো কিছু জানি না। দুই-আড়াই বছর আগে চলে এসেছি, সেটা কি এখন মনে আছে।

পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.জাকির হোসেন বলেন, প্রকল্প যেহেতু আগের, সেটা বলতে পারবো না। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যাবে।


বিডি/সি/এমকে 


মন্তব্য
জেলার খবর