অবরোধে ক্ষতি হচ্ছে অর্থনীতির

নিজস্ব প্রতিবেদক
০৬ নভেম্বর ২০২৩

প্রথমে তিনদিন পালনের পরে ‍দু’দিন গ্যাপ দিয়ে আবারো অবরোধ ডেকেছে বিএনপি। এ অবরোধের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে অর্থনীতিতে। হরতাল-অবরোধের কারণে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী এম.এ মান্নান। দ্বিতীয় দফায় অবরোধের প্রথম দিন বিশ্বের ১২ দেশের বাজার থেকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক প্রত্যাহারের খবর পাওয়া গেছে। যদিও তথ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়েছেন এ সংক্রান্ত খবর ভূল। বিদ্যামান রাজনৈতিক অস্থিরতা তাড়াতাড়ি কাটিয়ে ওঠতে না পারলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি চাচ্ছে নির্বাচনকালীন তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা, আওয়ামী লীগ তথা ক্ষমতাসীনরা বলছে- সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন। তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার দাবি মেনে নেওয়ার ও সরকার পতনের একদফা দাবি আদায়ের চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে অবরোধ ডেকেছে বিএনপি। জামায়াতও বিএনপির সঙ্গে মিল রেখে একই কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে।

অবরোধের কারণে দেশের অর্থনীতি কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তার কোনো পরিসংখ্যান আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ জানায়নি। তবে দেশের কক্সবাজার এলাকায় পর্যটন খাতে এ কয়েকদিনে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রথম দিন তিনের অবরোধের আগের হরতালের প্রভাবে এক রাতের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫০ টাকার মতো বেড়েছে। সরবরাহ কিছুটা ব্যাঘাত ঘটনায় সবজির বাজারেও প্রভাব পড়েছে। দেশের অর্থনীতির হিসাব না রাখা মানুষ সস্তায়, সামর্থ্যের মধ্যে শাক-সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম আশা করছে।

এদিকে সরকারি অফিস-আদালতে অবরোধের কোনো প্রভাব না থাকলেও রাস্তাঘাটে যানবাহন কমে গেছে। দুরপাল্লার বাসও কম চলাচল করছে। সড়কখাত ভিত্তিক আয় করা লোকজন বিপাকে পড়েছেন। ওদিকে অবরোধ সফল করতে যাত্রাবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রোববার সন্ধ্যার পরে রাজধানী ঢাকায় স্বল্প সময়ের ব্যবধানে তিন বাস পুড়েছে। এর আগে শনিবার সন্ধ্যা থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত রাজধানী ঢাকা ঢাকার বাইরে মোট ১০টি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরণের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সংলাপের কথা উঠে আসছে। রোববার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, সংলাপের সময় শেষ। বিএনপিকে সন্ত্রাসীদের দল ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কোনো সংলাপ হতে পারে না। তাছাড়া দেশের গার্মেন্টস সেক্টর নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি। নির্বাচনকালীন তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ও নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করার শর্ত মেনে নেওয়া ছাড়া সংলাপ বসতে চায় না বিএনপি। এ অবস্থায় বিদ্যামান পরিস্থিতি কতদিন চলমান থাকতে পারে, এ পরিস্থিতিতে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে অর্থনীতি- সেটা নিয়ে প্রশ্ন জনমনে।

 

বিডি/ই/এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর