ভগ্ন শরীরেও মঠটি দাঁড়িয়ে আছে বুক চেতিয়ে

১৬ মার্চ ২০২১

কুমারখালী (কুষ্টিয়া) সংবাদদাতা
কালের সাক্ষী হিসেবে ভগ্ন শরীরে এখনো বুক চেতিয়ে দাঁড়িয়ে আছে কুমারখালীর মাছগ্রাম মঠ। বৌদ্ধ ধর্মের উপাশনালয় এই মঠ বা বিহারের অবস্থান উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের মাছগ্রামে। উপজেলা সদর থেকে ৫ কিলোমিটার উত্তরে মঠটির আজ এই দশার কারণ অযত্ন, অবহেলায় আর সংস্কারের অভাব।


প্রাচীন বাংলার নিদর্শন এই মঠ কত বছর আগে তৈরি তা ঠিক বলা মুশকিল। ইতিহাস এর থেকে মুখ ফিরিয়েছে। তবে প্রাচীন বাংলার ইতিহাস থেকে যেটুকু জানা যায়- "মৌর্য" বংশ এবং গুপ্ত বংশের পরে বাংলার শাসনে আসে "পাল" বংশ। পাল বংশের প্রথম রাজা গোপাল, তিনি বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী ছিলেন। গোপালের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র "ধর্মপাল" রাজ্যের দায়িত্বে বসেন। ধর্মপাল রাজ্যের বিস্তারলাভসহ বৌদ্ধ ধর্ম এবং শিক্ষার উন্নয়নের জন্য অনেক প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেন। পিতার মতো তিনিও বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী ছিলেন।


ধর্মপাল (৭৮১-৮২১) খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত প্রায় ৪০ বছর রাজত্ব করেন। এই সময় তিনি ৫০টিরও বেশি বিহার বা "মঠ" তৈরি করেন। যেখানে বৌদ্ধ ধর্ম শিক্ষা দেওয়া হতো। পাল বংশের সময়কাল প্রায় ৪০০ বছর। পাল বংশের শেষ রাজা মদন পাল আনুমানিক (১১৪৩-১১৬১) খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনে বসেন। এরপর ১২ শতকের দ্বিতীয় ভাগে পাল বংশের বিলুপ্তি ঘটে।


ইতিহাস থেকে এটাও অনুমেয়- কুমারখালীর মাছগ্রামের এই মঠ পাল বংশের রাজত্বের কোনও এক সময় নির্মিত হয়েছিল। হিসাব মতে এই মঠের বয়স প্রায় ১২-১৩শ বছর। এই পুরাতন কীর্তিটি হয়তো কিছুদিন পর নিজের বয়সের ভার সইতে না পেরে ভেঙে পড়বে। বহুকালের স্মৃতি হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মঠটি আর দেখা যাবে না। পুরাতন কীর্তিটি সংস্কার এবং রক্ষায় সংশ্লিষ্টরা পদক্ষেপ নেবেন, এমনটিই আশা করে ইতিহাস সচেতন মানুষ।


এসএম/এমকে

 


মন্তব্য
জেলার খবর