দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেশের তৈরি পোশাক খাত নিয়ে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। ন্যূনতম বেতন (মজুরি) নির্ধারণের দাবিতে কারাখানা ফেলে রেখে রাজপথে নেমেছে পোশাককর্মীরা। সংশ্লিষ্টদের তরফ থেকে বেতন বাড়ানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীও সেই বেতন মেনে নিয়ে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন শ্রমিকদের প্রতি। কিন্তু বর্ধিত বেতন মেনে নিচ্ছেন না পোশাক শ্রমিকরা। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিশ্বের ১২ দেশের বাজার থেকে বাংলাদেশের পোশাক প্রত্যাহার করা হয়েছে, এমন গুজব ছড়িয়ে পড়েছে দেশে। যদিও তথ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন পোশাক প্রত্যাহারের বিষয়টি ‘ভুল সংবাদ’। নির্বাচনের আগে পোশাক নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র চলছে কিনা, সরকারকে বেকায়দায় ফেলার নকশা আছে কিনা- এসব খতিয়ে দেখার দাবি উঠেছে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে।
পোশাককর্মীদের এ আন্দোলনে ১২৩ কারখানা ভাঙচুর করা হয়েছে। এসব ঘটনায় ২২ মামলা হয়েছে, ৮৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বন্ধ আছে ১৭টি কারখানা। গাজীপুর ও কোনাবাড়ী এলাকার কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ভাংচুর, মামলা, গ্রেফতার ও কারখানা বন্ধ সংক্রান্ত এ তথ্য শনিবার (১১ নভেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে জানান শিল্প পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) জাকির হোসেন খান। গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকায় তুসুকা কারখানার সামনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
শুরু থেকে একটি পক্ষ আন্দোলনে উসকানি দিচ্ছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। ডিআইজি জাকির হোসেন বলেন- উসকানিদাতাতেরও আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। শ্রমিকদের সঙ্গে বহিরাগত কিছু লোক আছেন, তাদেরও গ্রেফতার করা হবে। তবে সাধারণ শ্রমিকদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই । এসব ঘটনার পেছনে কারা জড়িত, তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
গত ২৩ অক্টোবর থেকে বেতন বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনে নামে পোশাকশ্রমিকেরা। এরপর গত মঙ্গলবার ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু সেই মজুরি প্রত্যাখ্যান করে বুধ ও বৃহস্পতিবার গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভের সময় কারখানা ও গাড়ি ভাঙচুর, সড়ক অবরোধ, অগ্নিসংযোগ করা হয়। শ্রমিক-পুলিশ পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশের গুলিতে দুই শ্রমিক নিহত হয়। শনিবারও পোশাক শ্রমিকরা আন্দোলন করেছেন রাজধানী ঢাকার মিরপুরসহ গাজীপুরের শিল্প এলাকায়। শ্রমিকদের আন্দোলন ঘিরে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে শিল্প এলাকায়।
বিডি/ই/এমকে