বেশি দামে আলুবীজ বিক্রি, বেকায়দায় জয়পুরহাটের চাষীরা

আব্দুল্লাহ হেল বাকী, জয়পুরহাট
১২ নভেম্বর ২০২৩

 

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আলু উৎপাদনকারী জেলা জয়পুরহাটে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে আলুবীজ বিক্রি হচ্ছে। এতে বেকায়দায় পড়েছেন স্থানীয় আলুচাষীরা।

 

কৃষকদের অভিযোগ, কিছু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে চড়া দামে আলুবীজ বিক্রি করছেন। ফলে বেশি দাম দিয়ে আলুবীজ কিনতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। এতে এবার আলুর উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে।

 

জেলার বিভিন্ন এলাকায় ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে আলু চাষ। বর্তমানে বাজারে আলুর দাম ভালো থাকায় আলু চাষে ঝুঁকেছেন চাষীরা।

 

আলুচাষীরা জানান, একদিকে সার ও কীটনাশকের দাম বেড়েছে। অন্যদিকে   অতিরিক্ত দাম দিয়ে বীজ কিনতে হচ্ছে। যদি এবার আলুর দাম ভালো না পাওয়া যায়, তবে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হবে তাদের।

 

সদর উপজেলার হিচমী বাজারের কৃষক শাহীন বলেন, গত বছর এক বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলাম ১৭ হাজার টাকায়। বীজের দাম বেশি হওয়ায় এবার ৩ হাজার টাকা খরচ বেশি হয়েছে। হিচমী বাজারের একটি দোকান থেকে ব্র্যাক কোম্পানির বীজ আলু ৩২শ’ টাকায় কিনেছি। অথচ সরকার নির্ধারিত সেই বীজের মূল্য প্রায় ২৭শ’ টাকা।

 

গঙ্গাদাসপুরের কৃষক মামুন বলেন, দিন ঘুরে ঘুরে এক দোকান থেকে ৪শ’ টাকা বেশি দামে দুই বস্তা বীজ আলু কিনেছি। চক ফকিরপাড়া গ্রামের বাছেদ বলেন, আমরা ডিলারের কাছে গিয়ে সরকারের বেধে দেওয়া রেটে আলুবীজ পাচ্ছি না। ২৬শ’ থেকে ২৮শ’ টাকার আলু বীজ ৩২শ’ থেকে ৩৪শ’ টাকায় কিনতে হচ্ছে।

 

কালাই উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়নের আলু চাষি জাহাঙ্গীর, উদয়পুরের আনিছুর, জিন্দারপুর ইউনিয়নের সাজুসহ অনেকেই জানান, হিমাগারে লোকালভাবে সংরক্ষণ করা আলু বীজ আকারে বিভিন্ন নাম সর্বস্ব কোম্পানির লোগো ব্যবহার করে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে।

হিচমী বাজারের মেসার্স স্বর্ণালী এন্টারপ্রাইজের মালিক ও বিএডিসি অনুমোদিত বীজ ডিলার জুলফিকার আলী ভুট্টু বলেন, এলাকার কৃষকদের কাছে বিএডিসির আলুর চাহিদা তেমন নেই। প্রাইভেট কোম্পানির বীজের চাহিদা বেশি। বিএডিসির আলুবীজ সরকারি রেটের চেয়েও এক-দেড় টাকা কম দামে বীজ বিক্রি করছি।

 

মেসার্স লামিম ট্রেডার্সের আব্দুস সাত্তার বলেন, কতিপয় অসৎ ব্যবসায়ী যাদের লাইসেন্স নেই, তারা সিন্ডিকেট করে বীজের দাম বেশি নিচ্ছেন। এতে আমাদের সুনাম নষ্ট হচ্ছে, আমরা দাম বেশি নিচ্ছি না।

 

জয়পুরহাট কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা রতন কুমার রায় বলেন, আলুর বীজের বিষয়টি নিয়ে কৃষি বিপণন থেকে নিয়মিত মনিটরিং করছি। বীজ বিক্রেতাদের সতর্ক করা হয়েছে, যেন অতিরিক্ত মূল্যে কেউ বীজ বিক্রি না করেন।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মুজিবুর রহমান বলেন, জেলায় এবার ৩৮ হাজার ৬২৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিপরীতে আলুর বীজের চাহিদা আছে ৫৮ হাজার মেট্রিক টন।  আলু বীজের কোনো সংকট নেই। কেউ বেশি দামে বা নিম্নমানের আলু বিক্রি করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

বিডি/সি/এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর