শান্তিপূর্ণ, স্বচ্ছ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনসহ মানবাধিকার বিষয়ে বাংলাদেশকে ৩০১টি সুপারিশ করেছে বিশ্বের ১১০টি দেশ। জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ (ইউপিআর)’ বৈঠকে বাংলাদেশের ইউপিআর প্রতিবেদনের খসড়া গৃহীত হওয়ার পর এ সুপারিশগুলো আসে। বুধবার (১৫ নভেম্বর) রাতে জেনেভায় এ বৈঠক হয়।
খসড়ায় একই বিষয়ে একই ধরনের সুপারিশ করেছে অনেক দেশ। এ কারণে সুপারিশের সংখ্যাটি এত বড় দেখা যাচ্ছে। একই বিষয়ে একই ধরনের সুপারিশগুলোর মধ্যে একটা ধরলে সংখ্যা কিছুটা কম হবে।
সুপারিশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য—গুমবিষয়ক সনদ ও নির্যাতনবিরোধী সনদের অতিরিক্ত চুক্তি অনুমোদন, গুমের ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্ত, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সদস্যদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগের স্বাধীন তদন্ত ও দোষীদের বিচার ও সাজার ব্যবস্থা করা, মৃত্যুদণ্ডের বিধান বিলোপ ও ফাঁসির দণ্ড কমিয়ে কারাদণ্ড দেওয়া, সাইবার নিরাপত্তা আইনের সংশোধন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, সভা ও সংগঠনের অধিকার নিশ্চিতের ব্যবস্থা করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা, মানবাধিকার রক্ষী, নাগরিক সমাজ বা এনজিও সদস্যদের হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শন বন্ধ করা, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধ, নাবালিকাদের বিয়ে বন্ধে আইন সংশোধন।
এদিকে এ পর্যালোচনা সভায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। কিন্তু সুপারিশমালা অনুমোদনের সভায় তিনি না থাকায় আইনমন্ত্রীর পরিবর্তে বক্তব্য দেন জাতিসংঘ মিশনে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ সুফিউর রহমান।
সুফিউর রহমান বলেন, এসব সুপারিশ পর্যালোচনাসহ সিদ্ধান্ত আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় মানবাধিকার পরিষদের ৫৫তম অধিবেশনের আগেই জানিয়ে দেবে বাংলাদেশ।
এর আগে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির পর্যালোচনায় ইউপিআরে উঠে আসা ১৭৬টি সুপারিশ বাস্তবায়নের অগ্রগতি সরকারের পক্ষে তুলে ধরেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এরপর জাতিসংঘের সদস্য ১৯৩ দেশের মধ্যে ১১০ দেশ নিজেদের মূল্যায়ন ও সুপারিশ তুলে ধরে। বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির পর্যালোচনার ক্ষেত্রে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, নির্বাচন, শ্রম অধিকার, ভিন্নমত দমন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের জবাবদিহি না থাকার বিষয়ে বেশি জোর দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের দেশগুলো।
বিডি/এন/এমকে