জামাইদের নিয়ে জয়পুরহাটে নবান্নের মাছের মেলা

আব্দুল্লাহ হেল বাকী, জয়পুরহাট
১৮ নভেম্বর ২০২৩

 

সারি সারি দোকানে সাজানো রুই, কাতলা, চিতল, সিলভার কার্প, বিগ্রেড, বোয়ালসহ হরেক রকমের মাছ। চলছে হাঁকডাক দরদাম। এক থেকে শুরু করে ২০ কেজি ওজনের মাছ মিলছে। কেউ দর্শনার্থী হয়ে উৎসাহ নিয়ে দেখছেন, কেউ বা কিনছেন। শনিবার (১৮ নভেম্বর) এমন চিত্র দেখা গেছে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পাঁচশিরা বাজারে।

 

নবান্ন উৎসব ঘিরে প্রতিবছর পহেলা অগ্রহায়ণের দিনে এ বাজারে বসে দিনব্যাপী মাছের মেলা। দিনের জন্য পুরো বছর অপেক্ষায় থাকেন কালাই উপজেলাবাসী। মেলায় নদী, দিঘি পুকুরে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠা দেশীয় প্রজাতির টাটকা মাছ কিনতে ভিড় জমান ক্রেতারা পাইকাররা। অগ্রহায়ণে নতুন ফসল ঘরে উঠলেই নবান্ন উৎসব করেন উপজেলার কৃষকেরা।

 

এ মেলায় আসে উপজেলার মাত্রাই, হাতিয়র, মাদারপুর, হাটশর, হারুঞ্জ, পুনট, বেগুনগ্রাম, পাঁচগ্রামসহ ২৫ থেকে ৩০ গ্রামের মানুষ। উৎসবকে ঘিরে প্রতি বাড়িতে

মেয়ে-জামাইসহ স্বজনদের আগে থেকেই দাওয়াত দেওয়া হয়।

 

শনিবার মেলায় ২০ কেজি ওজনের একটি সিলভার মাছ মাথার ওপর তুলে ক্রেতা আকর্ষণের চেষ্টা মাছ বিক্রেতা সাইফুল ইসলাম। মাছটির দাম হাঁকেন ১৬ হাজার টাকা। মেলায় আকার ভেদে ২৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিগ্রেড সিলভার কার্প  এবং রুই কাতলা ৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

 

ক্রেতাদের মধ্যে সাবরিনা ইয়াসমিন এশা, আনিছুর রহমান,মুনিষ চৌধুরি, মোস্তাক রহমানসহ কয়েকজন  জানান, এবারের মেলায় প্রচুর মাছ উঠেছে। কিন্তু দাম অনেকটা বেশি। মাছ ব্যবসায়ী লেবু সরদার, আব্দুল কুদ্দুস মহন্ত মালী জানান, মাছের মেলায় প্রচুর লোক সমাগম হলেও বেচাকেনা সেই তুলনায় কম। তারপরও যেটুকু বেচাকেনা হয়েছে, সব খরচ বাদে তাতে লাভ টিকবে।

 

মেলায় বিক্রির জন্য এক বছর ধরে পুকুরে বড় বড় মাছ বাছাই করে চাষ করেছেন চাষি নাহিদ চৌধুরি। তাই এবার এ মেলায় বড় বড় মাছ বিক্রি করতে পারছেন বলে জানান তিনি। মেলায় আসা ক্রেতা দর্শনার্থীরা জানান, সময় আর আয়োজনের অভাবে সমাজ থেকে বাঙালির উৎসবগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। রকম উৎসবে অংশ নিতে পারলে ব্যস্ততম জীবনে কিছুটা প্রশান্তি আসে।

মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য ময়েন উদ্দিন জানান, প্রতি বছরের মতো এবারও নওগাঁ, বগুড়া, দিনাজপুর, গাইবান্ধাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে মাছ ব্যবসায়ীরা মাছ নিয়ে এসেছেন মেলায়। মাছের সরবরাহ বেশ ভালো। কালাই পৌরসভার মেয়র রাবেয়া সুলতানা বলেন, দেশীয় জাতের মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। মেলা উপলক্ষে এসব মাছ চাষ করায় জাতগুলো আবার ফিরে এসেছে। নবান্ন উৎসব উপলক্ষে আত্মীয়দের মধ্যে পারস্পরিক মিলনমেলার সুযোগ ঘটে, এটা ভালো দিক।

 

বিডি/সি/এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর