মায়ের কাছে আবদার ছিল জালসায় যাওয়ার। কিন্তু তাতে সায় দেননি মা। এতে বসতঘরে ঢুকে দরজা আটকে দেয় ১১ বয়সী বায়জিদ হোসেন। পরে তাকে ডাকলেও সাড়া দেয়নি। তাই দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকে পারিবারের লোকজন, দেখেন- গলায় রশি পেঁচানো বায়জিদ ঝুলছে ঘরের আড়ার সঙ্গে।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) রাত ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে পাবনার চাটমোহর উপজেলার সোনাহারপাড়া চরপাড়া এলাকায়। বায়েজিদ হোসেনের বাবার নাম আতাউর রহমান। আতাউর রহমানের তিন সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় সে পড়তো স্থানীয় স্কুলের পঞ্চম শ্রেণিতে।
এদিকে বায়েজিদকে তড়িঘরি করে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। সেখানে ডাক্তার জানান, সে বেঁচে নেই। হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ওদিকে বায়েজিদের এমন কাণ্ডকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারছেন না সমাজ সচেতনরা। শিশুর আত্মহত্যা ভাবিয়ে তুলছে তাদের। গবেষকদের বরাত দিয়ে বিট্রিশ গণমাধ্যম বিবিসি বলেছে, বর্তমানে শিশুরা খুব সহজে একা হয়ে পড়ছে। এতে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়া অনেকেই আত্মহত্যার দিকে ধাবিত হচ্ছে। তাদের কাউন্সেলিং বা পরামর্শ দেওয়ার মতো প্রাতিষ্ঠানিক কোন ব্যবস্থা নেই বললেই চলে।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সিফাত ই সাঈদ’র বরাত দিয়ে আরেকটি জার্নাল জানিয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংজ্ঞা অনুযায়ী ১৮ বছরের নিচের বয়সীদের শিশু বলা হয়ে থাকে। এ শিশুদের মাঝে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়লে সেটা সমাজের জন্য অবশ্যই এলার্মিং বিষয়। এজন্য অনেকগুলো কারণ থাকলেও অন্যতম কারণ হচ্ছে- এসব শিশুদের স্ট্রেস হ্যান্ডেলের ক্ষমতা খুবই কম। মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অবজারভেশনাল লার্নিং, বা দেখে শেখা। এ ধরনের শেখা থেকেও শিশুদের মাঝে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে কোনো শিশুর সামনে ক্রাইম পেট্রোল, বীভৎস কিছু সিনেমার দৃশ্য দেখা থেকে বিরত থাকা উচিত, দেখলেও তার আগে পরিবারকে বুঝতে হবে সন্তানের আবেগের বিকাশ কতটুকু হয়েছে। এক্ষেত্রে পারিবারিক রীতি বা শিক্ষা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এগুলো গুরুত্ব না দিলে শিশুদের আত্মহত্যা প্রবণতা বাড়তেই পারে।
বিডি/সি/এমকে