স্বল্প মেয়াদে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারে নানা ক্ষেত্রে সতর্কতার সঙ্গে মুদ্রানীতির রাশ টেনে ধরতে হবে। সেই সঙ্গে নিরপেক্ষ রাজস্ব নীতি ও মুদ্রার বিনিময় মূল্যের ক্ষেত্রেও হতে হবে আরো নমনীয়। বহুমুখী অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ও কঠিন বাহ্যিক পরিবেশ-পরিস্থিতি সামলে নিতে ক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে এসব পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশকে পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
সম্প্রতি দেশের অর্থনীতি মূল্যায়ন করে দেওয়া সংস্থাটির এক বিবৃতিতে এসব পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের জন্য নিজেদের দেওয়া ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ৬৮ কোটি ৯৮ লাখ মার্কিন ডলার অনুমোদন দেওয়ার পর এ বিবৃতি দেয় আইএমএফ।
বিবৃতিতে বাংলাদেশে মুদ্রানীতির কাঠামো আধুনিকায়নেরও প্রশংসা করেছে আইএমএফ। তাদের মতে, মুদ্রানীতি আধুনিক হলে এর মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি যেমন কমবে। পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতির প্রভাব জোরদার হবে। তাই এর ধারাবাহিকতাও অব্যাহত রাখতে হবে বলে পরামর্শ দেয় তারা।
পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়েও পূর্বাভাস দিয়েছে আইএমএফ। বলছে, চলতি অর্থবছরে দেশের ৬ শতাংশ প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা কমতির দিকে থাকলেও ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে রফতানি। কঠোর মুদ্রানীতি ও নিরপেক্ষ রাজস্ব নীতি অনুসরণ করলে মূল্যস্ফীতির হার কমে ৭.২৫ শতাংশ হতে পারে অর্থবছরের শেষে। তবে জিডিপির ৪.৬ শতাংশের মতো ঘাটতি থাকতে পারে রাজস্ব।
আইএমএফ জানিয়েছে, জরুরিভাবে আর্থিক খাতের সংস্কার করতে হবে। ব্যাংকিং খাতের ঝুঁকি কমাতে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ কমাতে হবে। আর পুঁজি পুনরুদ্ধারে নিতে হবে বিশেষ কৌশল।
উচ্চমধ্যম আয়ের কাতারে পৌঁছাতে দেশের অর্থনীতিতে নানা সংস্কার প্রয়োজন বলেও মনে করছে আইএমএফ। বলছে, এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানো, রফতানি পণ্যের বহুমুখীকরণ ও সামগ্রিকভাবে প্রবৃদ্ধির গতি বাড়াতে শ্রমশক্তিতে বাণিজ্য উদারীকরণ, বিনিয়োগ পরিবেশের উন্নয়ন, শ্রমশক্তির দক্ষতা উন্নয়ন ও নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো জরুরি।
ব্যাংক খাতের তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ কাঠামো জোরদার করার পাশাপাশি শাসনব্যবস্থার উন্নতি ও পুঁজিবাজারের উন্নয়ন করা গেলে আর্থিক খাতের দক্ষতা বাড়বে বলে মনে করছেন অনেকেই।
বিডি/ই/এমকে