গাজা যুদ্ধ ঘিরে বিপজ্জনক আঞ্চলিক উত্তেজনার মাঝে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সামরিক অভিযানের ইঙ্গিত দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত। সংসদে দেওয়া ভাষণে গ্যালান্ত বলেছেন, ইসরায়েল সাতটি ফ্রন্ট থেকে হামলার শিকার হচ্ছে। ইতোমধ্যে ছয়টি ফ্রন্টে পাল্টা হামলা চালিয়েছি এবং ব্যবস্থা নিয়েছি আমরা।
মঙ্গলবার দেশটির সংসদে দেওয়া ভাষণে বিষয়টি জানান ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী। ৭টি ফ্রন্ট হিসেবে গাজা, লেবানন, সিরিয়া, জুডিয়া এবং সামারিয়া (পশ্চিম তীরের ইসরায়েলি নাম), ইরাক, ইয়েমেন এবং ইরানের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাস। এ হামলায় ইসরায়েলে এক হাজার ২০০ প্রাণহানি ঘটে। এদিকে হামলার জবাব দিতে গাজা উপত্যকায় নির্বিচার হামলা করে ইসরায়েল। দুই মাসের বেশি সময় ধরে চালানো হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ২১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত ও ৫০ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে সেখানকার বেশিরভাগ এলাকা। জাতিসংঘ বলছে, হামলার কারণে গাজা ভূখণ্ডের ২৩ লাখ বাসিন্দার প্রায় ৮৫ শতাংশই বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
গাজার যুদ্ধ ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিননের বাইরে ছড়িয়ে পড়ার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে গ্যালান্তের মন্তব্যে। মিসর জানিয়েছে, লোহিত সাগরের তীরবর্তী রিসোর্ট শহর দাহাবের কাছে একটি ড্রোনে গুলি চালিয়ে ভূপাতিত করা হয়েছে। এ ড্রোনের উৎস তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। ওদিকে লোহিত সাগরে চলাচলকারী ইসরায়েল ও মার্কিন সব জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু করে প্রায় প্রত্যেকদিনই হামলা চালাচ্ছে ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। ইসরায়েলেও ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে তারা। শনিবার মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ ভারত মহাসাগরে একটি রাসায়নিক ট্যাংকার লক্ষ্য করে ড্রোন হামলার ঘটনায় ইরানকে দায়ী করেছে। সিরিয়ায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর জ্যেষ্ঠ এক জেনারেল নিহত হওয়ার পরদিন মিসরের দাহাবে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, এ অপরাধের মাশুল ইসরায়েলকে গুণতে হবে।
উত্তর ইরাকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়া গোষ্ঠী কাতাইব হিজবুল্লাহর হামলায় আমেরিকান তিন সৈন্য আহত হওয়ার পর ইরাকে কাতাইব হিজবুল্লাহর নিয়ন্ত্রণাধীন তিন জায়গায় বোমা হামলা চালিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইরাকের সরকার।
অন্যদিকে, ইরান-সমর্থিত লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহও ইসরায়েলের সীমান্তের শহরগুলোতে প্রায় প্রতিদিনই ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন হামলা ও গোলাবর্ষণ করছে। জবাবে সেই এলাকায় বিমা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।
বিডি/