নওগাঁর আত্রাইয়ে আহসানগঞ্জ পশুর হাটে থাকা শতবর্ষী দুই বটগাছ কেটে ফেলা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, নিয়ম মাফিক টেন্ডার ছাড়াই এ দুটি গাছ কাটেন আহসানগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস.এম মঞ্জুরুল আলম। গাছ দুটির দাম আনুমানিক প্রায় দুই লাখ টাকা বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিচার করছে, তারা এহেন বেআইনি কর্মকান্ডের বিচার দাবি করেছেন।
মঙ্গলবার সরেজমিনে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২শ বছর বয়সী এ হাটের গাছ দুটি ভোটের দুই দিন আগে ৬ জানুয়ারি কাটা হয়েছে। গাছ দুটি কাটার সময় আরো কয়েকটি বট, পাকুড়, তেতুল ও নিমগাছের ডাল-পালাও কাটা হয়। কাটা গাছ দুটির মধ্যে একটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। বাকি গাছের গুল ফেলে রাখা হয়েছে।
আহসানগঞ্জ বাজারে আসা প্রায় ৭০ বছর বয়সী আকালু প্রামানিক জানান, আমরা জন্মের পর থেকেই এ হাটের গাছগুলো দেখে আসছি। এসব গাছ রক্ষা না করে কেটে ফেলা হচ্ছে, এটা ঠিক নয়। ফেরদৌস হোসন নামে একজন জানান, নতুন রাস্তা নির্মালে গাছগুলো কোন বাধা নয়। সরকার যেখানে পরিবেশের ভারসম্য রক্ষায় গাছ রোপনের উদ্যোগ নিয়েছেন, সেখানে যৌক্তিক কারণ ছাড়াই রাস্তা নির্মাণের অজুহাতে প্রাচীনতম এ বট-বৃক্ষগুলো রক্ষা না করে কেটে ফেলা হলো। গাছ কাটার সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান তিনি।
হাটের কাঠ ব্যবসায়ী ইচাহক আলী বলেন, এলাকার সরকারি কোন গাছ কাটার টেন্ডার হলে ব্যবসায়ী হিসেবে আমাদেরকে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু টেন্ডার ছাড়াই প্রায় দুই লাখ টাকা মূল্যের এ গাছগুলো কাটা হয়েছে।
গাছ কাটার কাজে নিযুক্ত উপজেলার দাড়িয়াগাঁথি গ্রামের জহুরুল ইসলাম মোবাইল ফোনে বলেন, চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলমের নির্দেশে গাছগুলো কাটা হয়েছে।
এ ব্যাপারে আহসানগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস.এম মঞ্জুরুল আলম বলেন, নতুন রাস্তা নির্মাণে গাছগুলো সমস্যা হচ্ছিলো। তাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবাদুর রহমান প্রামানিকের সাথে কথা বলে গাছগুলো কাটা হয়েছে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবাদুর রহমান বলেন, গাছের ডাল কাটার কথা বলা হয়েছিল। পরে রাস্তায় মাটি ফেলতে সমস্যা হওয়ায় গাছই কেটে ফেলেছে।
আত্রাই উপজেলা ইউএনও সঞ্চিতা বিশ্বাস বলেন, রাস্তা নির্মাণে বড়জোর গাছের ডাল পালা কাটতে পারে। কিন্তু গাছ কাটতে পারে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি/২৪অনলাইন/সি/এমকে