শীতের ভরা মৌসুম এখন। কিন্তু বাজারে শীতকালীন শাক-সবজির দাম এখনো চড়া। কেবল শাক-সবজিই নয়, দাম বেড়েছে চালের, আটা-ময়দা, ডাল আর তেলেরও। ফলে নির্দিষ্ট আয় দিয়ে সংসার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছে বেশিরভাগ সাধারণ মানুষ। সরকারের তরফ থেকে দাম নিয়ন্ত্রেণে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার সুফল এখনো পায়নি ভোক্তারা। সবমিলে অসন্তোষ বিরাজ করছে তাদের মধ্যে।
সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে কোন কোন পণ্যের দাম বেড়েছে, সেটা হিসাব করা বেশ কষ্টসাধ্য। মোটাদাগে বলা যায়, প্রায় সব পণ্যেরই কম-বেশি দাম বেড়েছে। চালের ধরণ ভেদে কেজিতে দাম বেড়েছে ৬ টাকা পর্যন্ত। এক লাফে আটা-ময়দা ও ডালের দাম কেজিতে ১০ টাকা ও তেলের দাম লিটারে ৪ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। দাম বৃদ্ধির ফর্দে আছে প্রায় সব ধরনের শাক-সবজি, মাছ-মাংশ, ডিম, আদা-রসুনসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যও।
ঢাকায় শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) বিভিন্ন বাজারে পেঁপে, মুলা ও শালগম ছাড়া প্রায় সব ধরনের সবজির কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। আকারভেদে প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম ৪০-৬০ টাকা, শিমের কেজি ৮০ টাকা, মাঝারি আকারের লাউ ৮০ টাকা, বড় লাউ ১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি আলু ৬০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকা, আদা এবং রসুন ২০০-২৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
ক্রেতারা বলছেন, ভরা মৌসুমে শীতকালীন সবজির দাম কমার কথা থালেও বাজারে চিত্র এবার একেবারেই ভিন্ন দেখা যাচ্ছে। এখন সবজির এতো দাম হওয়ার কোনো যুক্তি থাকতে পারে না। বাজারে সিন্ডিকেট সক্রিয় থাকায় দাম বাড়ছে বলে মনে করছেন তারা।
ব্যবসায়ীরা অবশ্য দাম বৃদ্ধির পেছনে বৈরী আবহাওয়াকে দুষছেন। তাদের যুক্তি, এ কারণে কৃষকের অনেক সবজি নষ্ট হচ্ছে। এর প্রভাব পড়েছে বাজারে। তাছাড়া কুয়াশার কারণে সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। ঢাকায় তুলনামূলক পণ্য কম আসছে।
ওদিকে চালের বাজারে কেজিপ্রতি সরু (মিনিকেট) চাল ৭০-৭৪ টাকা, মাঝারি (বিআর-২৮, পায়জাম) চাল ৫৬-৬০ টাকা এবং মোটা চাল ৫২-৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সপ্তাহের ব্যবধানে ৫-৬ টাকা বেড়েছে দাম। সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ’র (টিসিবি) তথ্য বলছে, মাসের ব্যবধানে চালের দাম সরুটার ক্ষেত্রে ৫ দশমিক ৩৮, মাঝারির বেলায় ৩ এবং মোট চালে প্রায় ৪ শতাংশ বেড়েছে।
মুদি বাজারে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে অ্যাংকর ডাল ও ভালো মানের মসুর ডালের দাম। অ্যাংকর ৭৫ থেকে ৮০ টাকা, ভালো মানের মসুর ডাল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৪ টাকা বেড়েছে, বিক্রি হচ্ছে ১৭৩ টাকা দরে। ৫ লিটারের বোতলের তেলের দাম বেড়েছে ২০টাকা, ৮২৫ টাকার পরিবর্তে বিক্রি হচ্ছে ৮৪৫ টাকায়। প্রতি কেজি প্যাকেটজাত আটা ও ময়দার দাম ১০ টাকা এবং চিনির দাম ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
ওদিকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের দাম কেজিতে ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ডজনে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে, ১৩৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে, বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২২৫ টাকা দরে। সোনালি মুরগির দামও বেড়েছে, বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা কেজি দরে। ভোটের আগে ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া গরুর মাংসের কেজি এখন ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিডি২৪অনলাইন/ই/এমকে