যোগসাজশে টিকিট কালোবাজারি

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৬ জানুয়ারী ২০২৪

ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, টিকিট কাটার ক্ষেত্রে নানা নির্দেশনা ও নিয়ম অনুসরণ করতে হয় সাধারণ যাত্রীদের। এনিয়ে তদারকির থাকলেও থেমে নেই টিকিট কালোবাজারি। টিকিট বিক্রির প্রক্রিয়া রক্ষণাবেক্ষণে দায়িত্বরতরা কালোবাজারি চক্রের সঙ্গে জড়িত। এ চক্র বিভিন্ন কৌশলে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করে। এরপর সেই সেই টিকিট দেড় থেকে দ্বিগুণ দামে যাত্রীদের কাছে বিক্রি করে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। সম্প্রতি এ চক্রের ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এরপরই টিকিট কালোবাজারি সংক্রান্ত চমকপদ তথ্য জানায় এ সংস্থাটি।

র‌্যাব জানায়, কালোবাজারে বিক্রি টিকিটের বাড়তি লাভের ৫০ শতাংশ পায় সরাসরি সিন্ডিকেটে জড়িত সদস্যরা। বাকি ৫০ শতাংশ দেওয়া হয় টিকিট বুকিং কর্মচারী তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সহজ ডটকমের কর্মকর্তা-কর্মচারী আইটি বিশেষজ্ঞদের হাতে।  এদের প্রত্যক্ষ পরোক্ষ সহায়তায় প্রতিদিন দুই সিন্ডিকেটের হাতে যায় প্রায় ৫০০ টিকিট। এ দুই সিন্ডিকেটের একটি উত্তম, অপরটি সেলিম সিন্ডিকেট। গ্রেফতার ১৪ জনের মধ্যে এ দুই সিন্ডিকেটের হোতা সেলিম উত্তম চন্দ্র দাসও আছে।

শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। ঢাকার কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কমলাপুর রেলস্টেশনে সেলিম এবং বিমানবন্দর রেলস্টেশনে উত্তমের চক্র সক্রিয় ছিল। তারা সংঘবদ্ধভাবে দীর্ঘদিন বিভিন্ন আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে আসছিল।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়,  স্টেশনের কাউন্টারে বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ যাত্রী, রেলস্টেশনের কুলি, টোকাই, রিকশাওয়ালা দিনমজুরদের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে লাইনে দাঁড় করিয়ে দিয়ে তাদের মাধ্যমে টিকেট সংগ্রহ করে চক্রের সদস্যরা। প্রতি জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বিপরীতে চারটি টিকিট দেওয়ার বিধান থাকায় টিকিক সংগ্রাহক প্রত্যেককে ৪টি টিকিট সংগ্রহের বিনিময়ে ১০০ টাকা করে দেওয়া হয়। এদিকে সাধারণ যাত্রীদের টিকিট কাটার সময় কাউন্টারের কিছু অসাধু টিকিট বুকিং কর্মচারীদের সহায়তায় তাদের এনআইডি সংগ্রহ করে, পরবর্তীতে সেই এনআইডি দিয়ে ৪টি করে টিকেট সংগ্রহ করে। এ এনআইডির তথ্য ব্যবহার করে স্টেশনের কিছু অসাধু কর্মচারী এবং অনলাইনে টিকিট ক্রয়ে ব্যবহৃত ভেন্ডর সহজ ডটকম-এর কিছু অসাধু কর্মকর্তা সার্ভার রুম/আইটি সদস্যদের সহযোগিতায় এমনকি সার্ভার ডাউন করেও তারা অনলাইনে টিকেট সংগ্রহ করতো। অনেক ক্ষেত্রে টিকিট কাউন্টারে নিজেরা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করে চক্রের সদস্যরা। এভাবে প্রতিদিন প্রায় পাঁচ শতাধিক টিকেট সংগ্রহ করতো তারা।

র‌্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক বলেন, কালোবাজারির বিষয়ে বেশকিছু তথ্য পাওয়া গেছে। সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত কিছু নামও পাওয়া গেছে। তাদের বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

বিডি২৪অনলাইন/এন/এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর