করোনার ধাক্কা কাটানোর পর কাজের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি কর্মীদের অভিবাসন বেড়েছে। কিন্তু সেভাবে বাড়ছে না রেমিট্যান্স প্রবাহ। রেমিট্যান্স কম আসার বিভিন্ন কারণের অন্যতম হুন্ডি। এর বাইরে ব্যাংক খাতের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থাহীনতা, হুন্ডির লোভনীয় ফাঁদ রয়েছে। এ অবস্থায় রেমিট্যান্স প্রবাহের স্রোত ফিরিয়ে আনতে ব্যাংকগুলোর প্রতি অভিবাসীদের আস্থা বাড়াতে হবে। এটা সম্ভব না হলে বিদেশ থেকে টাকা আনার ক্ষেত্রগুলো পুরোটাই চলে যাবে হুন্ডির দখলে। এতে বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়বে রেমিট্যান্স প্রবাহ।
‘আন্তর্জাতিক শ্রম অভিবাসনের গতি-প্রকৃতি ২০২৩ অর্জন এবং চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানানো হয়। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরেন রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিট (রামরু ‘র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার তাসনিম সিদ্দিকী।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ১৩ শতাংশ বেড়েছে অভিবাসন, কিন্তু রেমিট্যান্স বেড়েছে মাত্র ২ দশমিক ৮৮ শতাংশ। ২০২৩ সালে মোট ১৩ লাখ ৫ হাজার ৪৫৩ জন বাংলাদেশি বিভিন্ন দেশে অভিবাসন করেছেন। ২০২২ সালে এ সংখ্যা ছিল ১১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৭৩ জন। ৪৮ বছরের মধ্যে গতবছর সর্বোচ্চ অভিবাসন হয়েছে বাংলাদেশ থেকে। পক্ষান্তরে ২০২৩ সালে রেমিট্যান্স এসেছে ২১ দশমিক ৯১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর ২০২২ সালে এসেছিল ২১ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলার।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২৩ সালে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে, পরিমাণে ৩৬ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। ২০২২ সালে তৃতীয় অবস্থানে থাকা এ দেশ থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে ৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ। আর দ্বিতীয় অবস্থানে গেছে সৌদি আরব। ২০২৩ সালে সৌদি আরব থেকে ৩২ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আসলেও ২০২২ সালের তুলনায় রেমিট্যান্স কমেছে প্রায় ৩ দশমিক ৯ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, এরপরের অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে যুক্তরাজ্য, কুয়েত ও ইতালি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক অভিবাসী গেছেন সৌদি আরবে, সংখ্যায় ৪ লাখ ৯৭ হাজার ৬৭৪জন। যদিও শ্রমিক গ্রহণের হার ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ১৫ দশমিক ৮৮ কমেছে। ২০২৩ সালে মালয়েশিয়ায় অভিবাসী হয়েছেন ৩ লাখ ৫১ হাজার ৬৮৩ জন। এরপরে অভিবাসন হয়েছে ওমানে, তারপরে অভিবাসন হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে।
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, স্বল্পদক্ষ কর্মীর অভিবাসন কমছে। স্বল্পদক্ষ কর্মী অভিবাসনের হার ২০২২ সালে ৭৩ দশমিক ০৮ থাকলেও ২০২৩ সালে দাঁড়ায় ৫০ শতাংশে। ২০২৩ সালে অভিবাসনের ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ পেশাজীবী কর্মী, ২৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ দক্ষ কর্মী, ২১ দশমিক ০১ শতাংশ আধা–দক্ষ কর্মী রয়েছে।
বিডি২৪অনলাইন/এন/এমকে