চাটমোহরে চাঞ্চল্যকর মা-ছেলে হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাদন

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি
০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

পাবনার চাটমোহরে প্রবাসীর স্ত্রী তার ১০ বছর বয়সী সন্তান হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই প্রবাসীর বাড়িতে চুরি করতে যায় তারা। বিষয়টি টের পাওয়ায় প্রথমে স্ত্রীকে ও পরে সন্তানকে হত্যা করা হয়। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের সাত দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার (০১ ফেব্রুয়ারি) প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী।

গ্রেফতাররা হচ্ছে- চাটমোহর উপজেলার ধুপুলিয়া গ্রামের মোজাম আলীর ছেলে সাদ্দাম হোসেন, তার সহোদর ভাই হোসেন আলী এবং রাজবাড়ির খানখানাপুর দত্তপাড়া এলাকার হুমায়ুন মিজি ওরফে হৃদয়।

পুলিশ সুপার জানান, পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার কথা স্বীকার করেছে। তাদের দেওয়া তথ্যে ওই প্রবাসীর বাড়ি থেকে চুরি যাওয়া গহনা, নগদ টাকা মোবাইল জব্দ করা হয়েছে।

হত্যাকান্ডের শিকার দু’জন হচ্ছেন- চাটমোহর উপজেলার দিঘুলিয়া গ্রামের আব্দুর রশিদের স্ত্রী লাবনী খাতুন ও তার সন্তান রিয়াদ। গত ২৬ জানুয়ারি ছাগল রাখার ঘর থেকে লাবনী খাতুনের ও বাড়ির অদুরে পুকুরপাড় থেকে রিয়াদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এদিন লাবনী খাতুনের ঘরের ভেতরের জিনিসপত্র এলোমেলো পাওয়া যায়। আব্দুর রশিদ ৭ বছর হচ্ছে মালয়েশিয়া থাকেন।

পুলিশ সুপার বলেন, নতুন ঘর নির্মাণের জন্য সম্প্রতি লাবনী খাতুন ২৫ হাজার ইট কেনেন। পাশাপাশি ব্যাংক থেকে নগদ টাকাও উত্তোলন করেন। ২৫ জানুয়ারি রাতে ছেলেকে নিয়ে অন্যান্য রাতের মতোই ঘুমিয়েছিলেন লাবনী।

অভিযুক্তদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ সুপার বলেন, লাবনী খাতুনের ইট কেনা ও ব্যাংকে যাওয়ার বিষয়টি লক্ষ্য করেন হোসেন আলী। তিনি লাবনী খাতুনের গ্রামেই বসবাস করেন। হোসেন আলীর ধারণা ছিল- লাবনীর কাছে নগদ টাকা এবং স্বর্ণালংকার রয়েছে। তাই বিষয়টি সাদ্দামের সঙ্গে শেয়ার করেন।

সাদ্দাম দীর্ঘদিন শ্বশুর বাড়ি গোপালগঞ্জে বসবাস করছেন, পেশায় একজন চোর ও ছিনতাইকারী। এদিকে লাবনীর বাড়ির তথ্য পাওয়ার পরে আরেক চোর হুমায়ুন কবির হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে গভীর রাতে দিঘলিয়া গ্রামে আসে সাদ্দাম। এরপর তারা লাবনীর বাড়িতে যায়। সেখানে সাদ্দাম এবং হৃদয় গাছ দিয়ে উঠে বাড়ির ভেতরে ঢোকে। বাড়ির প্রধান ফটক খুলে রেখে ঘরের পেছনে টিন কেটে ঘরে ঢোকার চেষ্টা করে। এ সময় লাবনী টের পেয়ে ঘরের দরজা খোলামাত্রই তাকে ধরে ফেলে তারা। এরপর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। ইতোমধ্যে রিয়াদেরও ঘুম ভেঙে যায়, সে ভয়ে চিৎকার শুরু করলে সাদ্দাম তাকে পুকুর পাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে গলায় মাফলার পেঁচিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে রিয়াদের লাশ গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়। এরপর সাদ্দাম এবং হৃদয় মিলে লাবনীর ঘর থেকে স্বর্ণালঙ্কার চুরি করে সেখান থেকে সটকে পড়ে। তারপর হোসেনের আলীর সঙ্গে দেখা করে গোপালগঞ্জে ফিরে যায় তারা।

 

বিডি২৪অনলাইন/সি/এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর