দেশে ব্যাংক খাতে দিন দিন বাড়ছে খেলাপি ঋণ। এ সঙ্কট কাটাতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচেছ কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে। কিন্তু সুফল তেমনটা মিলছে না। ফলে গত বছরে বিতরণ করা মোট ঋণের ৯ শতাংশ এখন খেলাপি। এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। তবে বাস্তব চিত্র প্রকাশ পেলে এ ঋণের পরিমাণ কয়েক গুণ বেশি হবে বলে মনে করছেন অনেকেই। পরিস্থিতি সামাল দিতে আইনের যথাযথ ও নিরপেক্ষ প্রয়োগ দরকার মনে করছেন তারা।
গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকায়। তার এক বছর আগে এর পরিমাণ ছিল এক লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা।
সে হিসাবে এক বছরে এ ঋণ বেড়েছে ২৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) খেলাপি ঋণ সংক্রান্ত এ তথ্য পাওয়া গেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে বিতরণ করা মোট ঋণের পরিমাণ ১৬ লাখ ১৭ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকাই খেলাপি।
তবে খেলাপি ঋণের তথ্যে ঋণ পুনঃগঠন-পুনঃতফসিলসহ মামলায় স্থগিত হওয়া অনেক খেলাপি ঋণের তথ্য সমন্বিত থাকে না। ফলে আন্তর্জাতিক নিয়মে হিসাব করলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও কয়েকগুণ বাড়ার কথা।
এদিকে খেলাপি ঋণ কমাতে ঋণ পরিশোধের সুবিধার্থে ঋণ গ্রহীতাদের নানা সুযোগ-সুবিধাও দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। করোনার দাপটের সময়ে ২০২০ ও ২০২১ সালে ঋণ পরিশোধে পুরোটাই ছাড় দেওয়া হয়। ২০২২ সালে কম সুদে ঋণ নেওয়া ও ঋণ পরিশোধে ছাড় দেওয়া হয়। ঋণের কিস্তির অর্ধেক পরিশোধে বিশেষ ছাড় ছিল গত বছরেও। এসব সুযোগের পরও কিন্তু ঋণ ফেরত দিচ্ছেন না অনেক ঋণ গ্রহীতা। ফলে খেলাপি ঋণ কমাতে পারছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া এমন বিশেষ ছাড় বন্ধ না হলে খেলাপি ঋণ কমবে না। ঢালাওভাবে সুবিধা দেওয়ায় ব্যাংকের পাশাপাশি গ্রাহকও বিপদে পড়বে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবোদ্ধাদের অনেকেই। তাদের মতে, খেলাপি ঋণ বাড়লে ব্যাংক খাত নিয়ে নেতিবাচক প্রশ্ন ওঠে। এতে একদিকে যেমন আমানতকারীদের অর্থের ঝুঁকি বেড়ে যায়, অন্যদিকে জমানো টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি হয়।
বিডি২৪অনলাইন/ই/এমকে