গত বছর বিদ্যুতের দাম বাড়নো হয়েছিল। এ বছর ইতোমধ্যে ৫ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিদ্যুতের ভর্তুকি নিয়ন্ত্রণে মূল্যবৃদ্ধি ছাড়া কোনো বিকল্প নেই, মূল্যবৃদ্ধির ফলে ভতুর্কি কমবে অনেকাংশে - এমনটাই জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। শিগগিরই যে কোনো সময় মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা আসতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে।
এদিকে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় চরম প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন অনেকই। তাদের মতে, দীর্ঘদিন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে চরম বেকায়দায় ধুঁকছেন সাধারণ মানুষ। এর মধ্যে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি ‘বোঝার ওপর শাকের আটি’ মনে হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন রয়েছে। ফলে উৎপাদন খরচ এবং বিক্রির মধ্যে ব্যবধান বেড়ে যাওয়ায় ভর্তুকির পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে বিদ্যুৎ খাতে। তাই ভর্তুকি সামাল দিতে দুই ধাপে বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ বৃদ্ধি হতে পারে।
সম্প্রতি এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন- ডলারের দাম এত বেশি বেড়েছে- জ্বালানির দাম সহনীয় থাকলেও লোকসান হচ্ছে। সরকার ভর্তুকি থেকে বের হয়ে আসতে চাইছে। এখন রাজস্ব থেকে যে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে, সেটা খুবই ব্যয়বহুল। তাই দাম সমন্বয় করা হবে।
দাম কতটুকু বাড়বে তারও একটা ধারণা দেন প্রতিমন্ত্রী। জানান, লাইন গ্রাহকের (৭৫ ইউনিট পর্যন্ত ব্যবহারকারী) মাসের বিল ২০ টাকার মতো বাড়তে পারে। ইউনিট প্রতি হয়তো ৩০ থেকে ৩৫ পয়সার মতো বাড়তে পারে। তবে তারা একটু সাশ্রয়ী হলে বিল আগের অবস্থায় থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
যারা বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন, দুই-তিনটা এসি ব্যবহার করেন বাসায়, তাদের বিল ইউনিট প্রতি ৭০ পয়সার মতো বাড়তে পারে। তাদের বিল মাসে ৪০০-৫০০ টাকা বেড়ে গেলে কোনো সমস্যা হবে না। গ্রাহকরা বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে গেলে তাদের বিল বাড়বে না, জানান নসরুল হামিদ।
এদিকে গতবারের মতো এবারও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে (বিইআরসি) এড়িয়ে নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের দাম সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী জানান, নির্বাহী আদেশেই দাম সমন্বয় করা হবে। কেননা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে দিলে ৩ মাস সময় লাগে, এতে ৩ মাসে ২০ হাজার কোটি টাকা লোকসান হতো।
ওদিকে জ্বালানিবোদ্ধাদের অনেকের দৃষ্টিতে, চালানোর মতো জ্বালানি সঙ্কট থাকলেও পরিকল্পনাহীন পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে একের পর এক। এতে ক্যাপাসিটি চার্জের কারণে ভর্তুকির ওপর চাপ বাড়ছে। তাদের মতে, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি কেবল অযৌক্তিকই নয়, এটা সমাধানের সঠিক কোনো পথ নয়। বরং মূল্যস্ফীতির এ সময়ে বিদ্যুতে দাম বাড়লে জনজীবনে আর্থিক বোঝার চাপ বাড়াবে। বিদ্যুৎ খাতে থাকা অব্যবস্থাপনা ঠিক করা না গেলে এ মূল্যবৃদ্ধি কোনো সুফল বয়ে আনবে না বলে অভিমত দিয়েছেন তারা।
বিডি২৪অনলাইন/এন/এমকে