প্রথম পুরস্কার ১৬০ সিসির মোটরসাইকেল, শেষেরটিও ১০০ সিসির মোটরসাইকেল। এ রকম ৩১টি পুরস্কার উল্লেখ করে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় দেদারছে কুপন বিক্রি করা হচ্ছে।
এ উপজেলায় নবনির্মিত শেখ রাসেল স্টেডিয়াম উদ্বোধন উপলক্ষ্যে নারী ফুটবল ম্যাচ ও দর্শকদের জন্য এ পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিটি কুপনের দর রাখা হয়েছে ২০ টাকা। যদিও এ স্টেডিয়াম ইতোমধ্যেই ভার্চুয়ালী উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এদিকে এ কুপন বিক্রি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এ কুপন বিক্রির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে থেকে মোটা টাকা হাতিয়ে নেওয়া হবে। কেননা সবাই পুরস্কার পাবেন না।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকা বরাদ্দে নির্মিত এ স্টেডিয়াম গত ১৬ নভেম্বর ২০২৩ ভার্চুয়ালী উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ১ মার্চ নারী ফুটবল ম্যাচের মাধ্যমে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে স্টেডিয়ামটির মাঠ।
উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ছুটিতে আছেন বলে জানান।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ইজিবাইকে প্রচার মাইক ব্যবহার করে নামি দামি সব ব্র্যান্ডের ৩১টি আকর্ষণীয় পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম মাঠ উদ্বোধনের প্রচারণা চালাচ্ছে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা। প্রচারণায় চটকদার সব বিজ্ঞাপনে বাহারি কথামালায় বিভিন্ন ধরনের পুরস্কারের প্রলোভন দেখিয়ে কুপন বিক্রি চলছে। এ কুপন কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষরা।
কুপন বিক্রেতা মামুন জানান, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা আমাদের যেভাবে বলেছে, আমরা সে অনুযায়ী কুপন বিক্রি করছি। এবিষয়ে আপনি ক্রীড়া সংস্থার উপজেলা সভাপতি ইউএনও স্যারের সাথে কথা বলুন। এটার মূলত মালিক হচ্ছে সাধারণ সম্পাদক, ইউএনও সাহেব। সবচেয়ে ভালো হবে ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক লুৎফর স্যারের সাথে কথা বলুন।
আরেক কুপন বিক্রেতা মো. হায়দার আলী জানান, সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ডিমলাসহ আশেপাশের উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কুপন বিক্রি চলছে। ১৮টা প্রচার গাড়ি কুপন বিক্রি করছে। দৈনিক তিনশো থেকে চারশো পর্যন্ত কুপন বিক্রি করছে প্রতিটি প্রচার গাড়ি।
স্থানীয়দের কয়েকজন জানান, এখন এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা চলছে। এ অবস্থায় মাইকের উচ্চ শব্দে পরীক্ষার্থীদের লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে।
ভ্যান চালক ফরহাদ হোসেন জানান, অনেক আশা নিয়ে ৫টা লটারি (কুপন) কিনেছে। এতে একশত টাকা খরচ হয়েছে। একটা পুরস্কারও না পেলে পুরো টাকটাই পানিতে পড়বে।
র্যাফেল ড্র আয়োজনে অনুমতি নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মো. লুৎফর রহমান বলেন, সাক্ষাতে আসেন। কথা হবে বলে ফোন কেটে দেন তিনি।
নীলফামারীর পুলিশ সুপার মো. গোলাম সবুর জানান, কুপন বিক্রির বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। নীলফামারী জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পঙ্কজ ঘোষের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ ফারুক-আল-মাসুদ বলেন, ইউএনও অনুমতি নিয়েছেন কিনা আমার জানা নেই। ইউএনওর সাথে কথা না বলে আপনাকে কিছু বলতে পারছি না। তবে যদি আপনারা মনে করেন রাষ্ট্রের জন্য অনেকে বেশি ক্ষতিকর কিছু করে ফেলেছে, তাহলে টাকা ফেরৎ দেওয়া হবে।
বিডি২৪অনলাইন/রাশিদুল ইসলাম/সি/এমকে