কালীগঞ্জে পুলিশ সদস্যের বাড়িতে কলেজছাত্রীর অনশন

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে পুলিশের এক সদস্যের বাড়িতে তিনদিন ধরে অনার্স তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী অনশন করেছেন। উপজেলার তুষভাণ্ডার ইউনিয়নের দক্ষিণ ঘনেশ্যাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ওই পুলিশ সদস্যের নাম রাব্বি আল মামুন ওরফে ইশতিয়াক বুলবুল। তিনি দক্ষিণ ঘনেশ্যাম এলাকার  আল আমিনের ছেলে, বর্তমানে ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে এমটি শাখায় পিওএমএ পদে (বিপি-৩৩৭০৩) কর্মরত আছেন।

মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ঘটনাস্থলে গেলে ভুক্তভোগী ওই কলেজছাত্রী জানান, ২০২২ সালের ২২ ডিসেম্বর পল্টন থানায় পুলিশের উপস্থিতিতে রাব্বি আল মামুন ওরফে ইশতিয়াক বুলবুলের সঙ্গে সরকারি বিধি শরিয়া মোতাবেক তার বিয়ে হয়।

বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী হিসেবে এক সপ্তাহ পল্টন থানার পাশে একটি আবাসিক হোটেলে রাত্রিযাপন করেন তারা। পরে সে বাসা ভাড়া নিয়ে সেখানে নিয়ে আসবে, এমন কথা বলে আমাকে আমার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।

বাড়ি আসার পরে দুই তিন মাস সে আমার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখে স্ত্রী হিসেবে সবকিছু দেয়। কিন্তু - মাস যেতে না যেতেই  সে আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।

এদিকে তার অফিসে গিয়ে আমাকে তার বাসায় নেওয়ার জন্য চাপ দিলে সে নানান টালবাহানা শুরু করে। এরপর এক বছর যেতে না যেতেই আমাকে স্ত্রী মর্যাদা থেকে বঞ্চিত করে। সেই সঙ্গে আমাদের কাবিননামাসহ সব ডকুমেন্ট গায়েব করে ফেলে।

এরপর আমি আমার ফোনে এবং আমার কাছে রক্ষিত ডকুমেন্ট পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের উপস্থাপন করি। তারা আমাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে তার বাড়িতে তোলার কথা বলে তাকে। কিন্তু আজকাল করে আমাকে বাড়িতে নিচ্ছে না এবং স্ত্রীর মর্যাদাও দিচ্ছে না। তাই আমি স্ত্রীর মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে তার বাড়িতে এসে অবস্থান করছি।

তুষভাণ্ডার ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ড সদস্য রাকিবুল ইসলাম পলাশ পুলিশ সদস্য প্রতিবেশীরা জানান, স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে রোববার বিকেলে রংপুরের একটি মেয়ে রাব্বি আল মামুনের বাড়িতে এসেছে।  বাড়ির লোকজন সদর দরজা বন্ধ করে দিয়ে মেয়েটিকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এ সময় মেয়েটি বাড়ির দরজার সামনে অবস্থান নেয়।

ইউপি সদস্য রাকিবুর ইসলাম পলাশ আরো জানান, মেয়েটির নিরাপত্তার জন্য গ্রাম্য পুলিশ দিয়ে পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

পুলিশ সদস্য রাব্বি আল মামুন ওরফে ইশতিয়াক বুলবুলের মুঠোফোনে জানান, ওই মেয়ের সাথে ঢাকায় আমার যা হয়েছে, সেগুলো ঢাকায় আবার সমাধান হয়েছে। জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে আমাকে শাস্তিও দেওয়া হয়েছে। ওই মেয়েকে আমি বাড়িতে উঠতে দেব না।

কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ইমতিয়াজ কবির বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। কোন পক্ষ থানায় লিখিত কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জহির ইমাম বলেন, ঘটনাটি জানার পর এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বিষয়টি কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জকে বলা হয়েছে।

 

বিডি২৪অনলাইন/লাজু মিয়া/সি/এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর