পিছু ছাড়ছে না দুর্নীতি। এর লাগাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাই ডিসিদের (জেলা প্রশাসকদের) দুর্নীতি বিষয়ে সচেতন থাকতে বলা হয়েছে। দুর্নীতি প্রতিরোধ সংক্রান্ত বার্তা দিয়ে এ বিষয়ে সহযোগিতা চেয়েছে এ সংস্থা। কেননা জেলা প্রশাসকরা সংশ্লিষ্ট জেলায় সরকারের প্রতিনিধি। তারা ৩০ থেকে ৩৫টি কমিটির সভাপতি এবং জেলার সব কার্যক্রম সম্পর্কে সবসময় অবহিত থাকেন। আর এ কারণে কোথাও অনিয়ম-দুর্নীতি হলে তার তথ্য  সবার আগে তাদের কাছে আসার কথা।

সোমবার (৪ মার্চ) ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ডিসি সম্মেলন হয়। সেখানেই এ বিষয়ে কথা বলেন দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ। পরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বিষয়টি জানান দুদক চেয়ারম্যান। 

ডিসিদের বিরুদ্ধে অনেক সময় দুর্নীতির অভিযোগ থাকে। এ ক্ষেত্রে তাদের প্রতি আপনাদের বার্তা কি ছিল- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আপনাদের অফিস দুর্নীতিমুক্ত, আপনি নিজে দুর্নীতিমুক্ত কিনা, আগে নিজের কাছে প্রশ্ন করেন- ডিসিদের এ কথা বলা হয়েছে।

তিনি জানান, ডিসিদের বলা হয়েছে- আপনার অফিস দুর্নীতিমুক্ত না হলে সেক্ষেত্রে আগে নিজের অফিস দুর্নীতিমুক্ত করুন। শুধু নিজের অফিস নয়, জেলা থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায়ে আপনাদের অধীনে থাকা সব অফিস দুর্নীতিমুক্ত করার চেষ্টা করুন। নিজের ঘর থেকে দুর্নীতিমুক্ত করুন, তারপর অন্যান্য দুর্নীতিগুলোর খোঁজখবর রাখেন- এ হলো বার্তা।

ডিসিদের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ অবশ্যই আমলে নেওয়া হয়  উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান জানান, অভিযোগ আমলে নিয়ে অনুসন্ধান করা হয়। প্রাথমিকভাবে প্রমাণ হলে দুদকের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়।

দুদক চেয়ারম্যান আরও জানান, জেলা প্রশাসকদের এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে বলা হয়েছে। কোথায় দুর্নীতি হচ্ছে, কোথায় অনিয়ম হচ্ছে- এগুলো ডিসিদের কাছে আসে বা কীভাবে সব তথ্য আসতে পারে সেই একটা মেকানিজম তৈরি করে তথ্য সংগ্রহ করার কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, তথ্য সংগ্রহ করে ডিসিরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। যেগুলো দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠানোর প্রয়োজন, সেগুলো পাঠিয়ে দেবেন। আর যেগুলো একান্ত বিভিন্ন কারণে সরাসরি পাঠাতে সমস্যা হলে প্রতি ১৫ দিনে একবার একটি গোপনীয় প্রতিবেদন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠাবেন। গোপনীয়ভাবে পাঠানো প্রতিবেদন আমরাও জেনে যাব। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের দুটি কাজ-প্রতিরোধ এবং প্রতিকার জানিয়ে দুদক প্রধান বলেন, তদন্ত অনুসন্ধান করে যদি মামলার মতো হয়, তাহলে মামলা করি। বিচারের জন্য আদালতে সোপর্দ করি। আর প্রতিরোধের ব্যাপারে জেলা প্রশাসকদের সাহায্য ছাড়া এ কার্যক্রম সুচারুভাবে করতে পারে না দুদক। তাই এ বিষয়ে সহায়তা কামনা করা হয়েছে ডিসিদের কাছে।

বিডি২৪অনলাইন/এন/এমকে