জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণ ও জগন্নাথে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনার পর দেশে উচ্চ শিক্ষা ক্ষেত্রে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির বিষয়টি জোরালো ভাবে সামনে এসেছে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬ শতাংশ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৬ শতাংশ এবং মেডিকেল কলেজে ৫৪ শতাংশ ছাত্রী যৌন হয়রানির শিকার হন। এ ক্ষেত্রে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীদের জন্য তুলনামূলক বেশি অনিরাপদ। ক্লাস চলাকালীন, ক্লাস না থাকার সময়, করিডোর, খেলার মাঠে হয়রানির ঘটনা ঘটে।
যৌন হয়রানি সংক্রান্ত এ পরিসংখ্যানের তথ্য উঠে এসেছে বেসরকারি আইনি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)’র জরিপ প্রতিবেদনে। রোববার (২৪ মার্চ) ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে এক মতবিনিময় সভায এ জরিপের ফলাফল তুলে ধরে ব্লাস্ট।
জরিপের তথ্য তুলে ধরে সভায় জানানো হয়, নিজ শ্রেণির চেয়ে অন্য শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দ্বারা দুই-তৃতীয়াংশ ছাত্রী হয়রানির শিকার হন। সহপাঠীদের মাধ্যমে ২৫ শতাংশ এবং ক্যাম্পাসে বহিরাগত পুরুষের মাধ্যমে ৭ দশমিক ৯ শতাংশ ছাত্রী শিকার হন হয়রানির। নিজেদের বিভাগ ও অন্য বিভাগের পুরুষ শিক্ষকদের মাধ্যমেও হয়রানির শিকার হন ছাত্রীরা।
যৌন হয়রানি ছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আগের ব্যাচের ছাত্র, শিক্ষকদের দ্বারা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, হয়রানি ও ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের শিকার হন ৭৪ শতাংশ মেয়ে শিক্ষার্থী। শিক্ষাঙ্গনের পাশাপাশি অনলাইন প্লাটফর্মেও নারীর প্রতি সহিংসতার চিত্র তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে। জানানো হয়, অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অশালীন, ক্ষতিকর মন্তব্যের শিকার হন ৫৭ শতাংশ নারী। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি নারী অনলাইনে সহিংসতার শিকার হন।
সভায় বক্তারা বলেন, সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কমিটি গঠনের নির্দেশনা রয়েছে সর্বোচ্চ আদালতের। কিন্তু এটা না হওয়া দুঃখজনক। তাছাড়া নীতিমালার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তাই এ বিষয়ে যুগোপযোগী আইন প্রণয়নের দাবি জানানো হয় সভায়। সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্না সভায় সভাপতিত্ব করেন। বক্তব্য দেন- বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, ব্লাস্টের ট্রাস্টি তাহমিনা রহমান প্রমুখ।
বিডি২৪অনলাইন/এন/এমকে