বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যায়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা পিটিয়ে হত্যা করে ২০১৯ সালে। এরপর সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু ২৮ মার্চ মধ্যরাতে কেন্দ্রীয় কয়েক নেতাসহ ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী এ ক্যাম্পাসে মিছিলের মতো প্রবেশ করেন। এর প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা।
ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেওয়ার পাশাপাশি ৬ দফা দাবি জানিয়েছেন তারা। এসব দাবি না মেনে নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাত ৮টার পর বুয়েটের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে দাবিসহ এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছি। শনিবার বুয়েটের সব ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করা হবে। ক্যাম্পাসের সব প্রবেশদ্বারে অবস্থান নেওয়ার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশেও জড়ো হবেন তারা।
তাদের ৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্পষ্ট বিধিমালা লঙ্ঘন করায় ২৮ মার্চ মধ্যরাতে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের সমাগমের হোতা পুরকৌশল বিভাগের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাব্বিকে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে। তার হলের সিট বাতিল করতে হবে।
ইমতিয়াজের সঙ্গে বুয়েটের যেসব শিক্ষার্থী জড়িত, তাদের বিভিন্ন মেয়াদে হল ও টার্ম বহিষ্কার করতে হবে। ২৮ মার্চ মধ্যরাতে ওই ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা কেন ও কীভাবে ক্যাম্পাসে প্রবেশের অনুমতি পেয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, এ বিষয়ে সুস্পষ্ট জবাবদিহি বুয়েট প্রশাসনকে দিতে হবে।
প্রথম দুই দফার দাবি শনিবার সকাল ৯টার মধ্যে বাস্তবায়ন করা না হলে ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের (ডিএসডব্লিউ) পদত্যাগ করতে হবে। মধ্যরাতে ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রবেশ করায় নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত শিক্ষার্থীরা। এর প্রতিবাদ হিসেবে শনি ও রোববার টার্ম ফাইনালসহ সব অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করা হবে।
সবশেষ দাবিতে বলা হয়েছে- আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো রকম হয়রানিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না মর্মে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে বুয়েট প্রশাসনকে।
এদিকে রাত ১০টার দিকে এক বিজ্ঞপ্তিতে বুয়েট প্রশাসন জানায়, অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বির হলের সিট বাতিল করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর টার্ম/সেমিস্টার ফাইনালসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম চলমান থাকবে।
বিডি২৪অনলাইন/এন/এমকে