মাসোয়ারা নিচ্ছে তেঁতুলিয়া হাইওয়ে পুলিশের ওসি

মো.সম্রাট হোসাইন,পঞ্চগড়
২১ মে ২০২৪

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া হাইওয়ে পুলিশের ওসি বিভিন্ন যানবাহন চালকদের কাছে থেকে মাসোয়ারা আদায় করছেন। এছাড়া মহাসড়কে নির্বিঘ্নে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা এমন কথা জানিয়েছেন। তবে মাসোয়ারা ও চাঁদাবাজির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তেঁতুলিয়া হাইওয়ে  পুলিশের ওসি।

ভুক্তভোগীরা জানান, জেলার তেঁতুলিয়া, দশমাইল, পঞ্চগড়, কালান্দিগঞ্জ, জগদল, ভজনপুরসহ বিভিন্ন এলাকা দিয়ে চলাচলকারী পণ্যবাহী পিকআপ, ট্রাক ছাড়াও  বাঁশের গাড়ি, ভারতীয় গরু পরিবহনের জন্য প্রতিমাসে নির্ধারিত হারে টাকা পৌঁছে দিতে হয় হাইওয়ে পুলিশের ওসির হাতে। সময়মত টাকা না দিলে কারণে অকারণে মামলা, গাড়ি আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।  তারা বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত করে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দারি জানান।

পঞ্চগড় পিকআপ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন জানান, তার নিজেরসহ স্বজনদের মিলে তাদের মোট ২০ টি গাড়ি আছে। প্রতি মাসে এসব গাড়ির জন্য ২০০ টাকা হারে হাজার টাকা ওসির হাতে দেন তিনি। টাকা না দিলে বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হতে হয় পুলিশের কাছে।

পিকআপ মালিক সমিতির সভাপতি আলাউদ্দিন বলেন, হিসাব করে বা মাসে কোন টাকা দেওয়া হয় না। তবে এটা কাজ করবেন, ওটা কাজ করবেন ওসি বললে, তখন কিছু টাকা দেওয়া হয়।

দশমাইল এলাকার শরিফুল ইসলাম বলেন, প্রতি মাসে পাঁচটি ট্রাক্টরের জন্য হাজার ৫০০ টাকা ওসির হাতে দেন। বাবুল হোসেন জানান, প্রতিমাসে হাইওয়ে পুলিশকে টাকা না দিলেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দিতে হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বাঁশ ব্যবসায়ী জানান, গ্রামের ছোট সড়কে ট্রাকে বাঁশ লোড করলে গাড়ি বের করতে খুবই ঝামেলা হয়। এ জন্য মহাসড়কের পাশে ট্রাকে বাঁশ লোড দেই। কিন্তু হাইওয়ে পুলিশকে টাকা না দিলে হয়রানি হতে হয়।পরে ব্যবসায়ীরা সবাই মিলে ওসির সাথে বসে আপোস করে প্রতি গাড়ি এক হাজার টাকা করে দেওয়া হয়।

কামাত পাড়া এলাকার ইয়াসিন আলী জানান, তিনি মোটরসাইকেলে রোগী দেখতে গিয়েছিলেন ভজনপুর এলাকায়। রাতে ফেরার পথে জেমকন খাম্বা কোম্পানির সংলগ্ন এলাকায় হাইওয়ে পুলিশ গতিরোধ করে। হেলমেট ও গাড়ীর রেজিস্ট্রেশন ছিল। কিন্তু ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় হাজার দুইশ টাকা মামলা দিবেন জানায় তারা। পরে দুই হাজার টাকা চান। শেষে ৭০০ টাকা দিতে হয়েছে পুলিশকে।

সড়কে যানবাহন থামিয়ে কাগজপত্র দেখার নামে সম্প্রতি টাকা নেওয়ার একটি ভিডিও প্রতিবেদকের হাতে আসে। যদিও ওই পুলিশ সদস্যকে বদলি করা হয়েছে অন্য এলাকায়।

তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মো.জাকির হোসেন মোল্লা মাসোয়ারা ও চাঁদাবাজির বিষয়টি অস্বীকার করেন।

 

বিডি২৪অনলাইন/সি/এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর