নওগাঁর ধামইরহাটে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠা শালবনের (আলতাদিঘী জাতীয় উদ্যান নামে পরিচিত) শালগাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। অন্যদিকে দফায় দফায় অগ্নিকান্ডে আলতাদিঘীর পশ্চিম ও দক্ষিণ প্রান্তসহ বনের ভেতরে বিভিন্ন অংশে বেতের গাছসহ প্রায় অর্ধ শতাধিকেরও বেশি শাল গাছ পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অবাধে গাছ কাটা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাদের মতে, অবৈধভাবে গাছ কাটার সঙ্গে জড়িতদের এখন-ই দমাতে না পারলে অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়বে গাছের প্রাকৃতিক এ আধার।
সোমবার (৩ জুন) দুপুরে সরজমিনে দেখা গেছে, আলতাদিঘীর পশ্চিম পাড়সহ বনের ভেতরের বিভিন্ন অংশে শতাধিকেরও বেশি শাল, ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি গাছের গোড়া ও এর অংশবিশেষ মাটিতে পড়ে আছে। কেউ কেউ শাল গাছের অর্ধেক, আবার কেউ কেউ গোড়া পর্যন্ত কেটে নিয়ে গেছে। এতে বনের পশ্চিম ও দক্ষিণ পাশে অনেকটাই ফাঁকা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এবং বন বিভাগের অসাধু কিছু অফিসার ও কর্মচারীদের যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে দুর্বৃত্তরা রাতে শালগাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে সাবাড় করছে।
অন্যদিকে দফায় দফায় অগ্নিকান্ডের ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে দেখা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এটা নিছক দুর্ঘটনা নাকি পরিল্পিতভাবে আগুন ধরিয়ে দেওয়া- এনিয়ে সন্দেহ রয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। এ বিষয়ে বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পুনঃতদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
অগ্নিকান্ডের বিষয়ে বনবিট অফিসার আনিসুর রহমান জানান, "মাদক সেবীদের ফেলে দেওয়া বিড়ি সিগারেটের আগুন থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হতে পারে।"
ধামইরহাট বনবিট সূত্রে জানা গেছে, পাইকবান্দা রেঞ্জের ধামইরহাট বিটে অবস্থিত আলতাদিঘী শালবন। উপজেলার ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানের মধ্যে দিঘীটি অন্যতম। শালবনসহ ৬শ ৫২ দশমিক ৩৭ একরের মধ্যে মূল দিঘীটির আয়তন প্রায় ৪৩ একর। এ উপজেলায় প্রাচীন দিঘী গুলোর মধ্যে এটাই সর্ববৃহৎ ও সচল দিঘী। ২০১১ সালের ১৪ ডিসেম্বর শালবনসহ আলতাদিঘীকে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়।
বিডি২৪অনলাইন/সি/এমকে