পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাষা এলাকার সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির উপকারভোগীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেছেন বন কর্মকর্তা মধুসুধন বর্মন। কাগজপত্র ঠিক করার নামে এ উৎকোচ নিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া গাছ বিক্রি করে দেওয়ার প্রায় এক বছর হয়ে গেলেও গাছ বিক্রির নায্য টাকা পাননি তারা। ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন এ তথ্য।
জানা যায়, ২০০৩-৪ অর্থবছরে সদর উপজেলার সন্ন্যাসী পাড়া থেকে ঘাগড়া বিওপি পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার, বেরুবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সালটিয়া পাড়া পর্যন্ত ৩ দশমিক ৮০ কিলোমিটার, ঘাগড়া বিওপি থেকে বেরুবাড়ি পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার এলাকায সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির আওতায় গাছের চারা রোপণ করা হয়। এসব এলাকায় উপকারভোগী রয়েছে ১১৮ জন।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে এসে ওই কর্মসূচির ৪ হাজার ৬৬৭টি গাছ ১২১টি লট এক কোটি ৫৩ লাখ ৯৭ হাজার ৩৫৭ টাকা বিক্রি করা হয়েছে। সামাজিক বনায়ন বিধিতে বলা হয়েছে, গাছ বিক্রির মোট টাকার মধ্যে ৫৫ শতাংশ পাবেন উপকারভোগীরা।
সন্ন্যাসীপাড়া এলাকার উপকারভোগীদের মধ্যে দিনমজুর ফাতেমা বেগম বলেন, দুই হাজার টাকা না দিলে অফিসের লোক গরম দেখায়। কাগজ জমা নিবেন না, বিল পাশ হবে না- এসব কথা বলে। তাই ধার দেনা ও হাজিরা দিয়ে টাকা যোগাড় করে দিছি।
আরেক উপকারভোগী হাসিনা বেগম বলেন, দুই হাজার টাকা দিছি জুলহাস মেম্বারকে। টাকা না দিলে কাগজ জমা নিবে না বলছে অফিস।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ বলেন, গত বছরের বর্ষায় গাছ কেটেছে। প্রায় এক বছর হলো এ পর্যন্ত আমাদের অংশের টাকা পাইনি। অফিসে কতবার গেছি হিসাব নেই। তার উপর দুই হাজার করে টাকা নিছে অফিস।
ইউপি সদস্য জুলহাজ আলী বলেন, বন বিভাগের কর্মকর্তা মধুসুদন বর্মন আমাদেরকে সবার কাছ থেকে গাছের চারা বাবদ দুই হাজার করে টাকা নিতে বলেছেন। আমরা ৪৫ জনের টাকা তুলে ৯০ হাজার টাকা বন কর্মকর্তাকে দিছি।
ইউপি সদস্য হাসিবুল ইসলাম জানান, যারা দুই হাজার করে টাকা দিছেন, তাদের চেক হয়েছে। আমাদের এখনো হয়নি। উপায় না পেয়ে আমরাও দুই হাজার করে টাকা দিছি।
পঞ্চগড় সামাজিক বনায়ন নার্সারি ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মধুসুধন বর্মন প্রথমে গাছের চারা বাবদ দুই হাজার করে টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন। উপকারভোগীদের টাকা প্রদানে বিলম্ব হওয়ার বিষয়ে বলেন, দুইটি বাগান উপকারভোগীর ফাইল দিনাজপুর অফিসে পাঠানো হয়েছে।
বিডি২৪অনলাইন/সি/এমকে