নানা পদক্ষেপ নিয়েও ব্যাংক খাতের প্রধান ক্ষত খেলাপি ঋণ সারিয়ে তোলা যাচ্ছে না। বরং দিনকে দিন বাড়ছে খেলাপি ঋণের বোঝা। বিতরণ করা ঋণের ১১.১১ শতাংশ খেলাপি হয়ে আছে। মার্চ প্রান্তিক শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। তুলনা করলে এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৫০ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা। এ অবস্থায় স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে খেলাপি ঋণ আদায়ের পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতি বোদ্ধারা।
খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির তথ্য বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হালনাগাদ বিবরণী থেকে পাওয়া গেছে। তথ্যমতে, গত এক বছরে যে পরিমাণ খেলাপি ঋণ বেড়েছে, তার মধ্যে তিন মাসেই বেড়েছে ৩৬ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা। গত বছর মার্চে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ হাজার কোটি টাকা। সেখান থেকে বেড়ে ডিসেম্বরে দাঁড়ায় এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকায়।
গেল মার্চ মাস শেষে ব্যাংকিং খাতে মোট ১৬ লাখ ৪০ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে এক লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। শতাংশের হিসাবে সেটা ১১.১১ শতাংশ।
দুর্নীতি নিয়ে কাজ করা সংস্থা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যারা খেলাপি ঋণের জন্য দায়ী, তাদের কথা ও পছন্দমত কাজ করা হচ্ছে। খেলাপিদের সুবিধা দিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। মূলত দায়ীদের সুরক্ষা দেওয়ায় খেলাপি বাড়ছে বলে মনে করছেন তারা।
এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত মেনে রাষ্ট্রায়াত্ত্ব চার ব্যাংককে চলতি জুনের মধ্যে খেলাপি ঋণ ১২ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে মার্চ পর্যন্ত এ সীমার মধ্যে কোনো ব্যাংক আসতে পারেনি বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) যে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে, তার শর্তের একটি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার কমানো। চলতি বছরের মধ্যে এ ঋণ ১০ শতাংশে নামিয়ে আনতে বলেছে সংস্থাটি। কিন্তু খেলাপি না কমে উল্টো বেড়েছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মার্চ শেষে রাষ্ট্রয়াত্ত্ব বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে ঋণের পরিমাণ তিন লাখ ১২ হাজার ২৬৬ কোটি টাক আর বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঋণ ১২ লাখ ২১ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি মালিকানার ক্ষেত্রে২৭ শতাংশ ও বেসরকারির ক্ষেত্রে ৭.২৮ শতাংশ খেলাপি। ওদিকে বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোতে ১৩.৮৮ ও বিদেশি ব্যাংকগুলোতে ৫.২০ শতাংশ খেলাপি ঋণ রয়েছে।
বিডি২৪অনলাইন/ই/এমকে