উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বেড়ে নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। জেলার আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের গরীবুল্লাহ পাড়া, বারোঘরিয়া, গোবরধন, সদর উপজেলার কালমাটি এলাকার অন্তত ৫ হাজার পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে গ্রামীণ রাস্তাঘাট, কৃষকের ধান, বাদাম, মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত। আর বাড়িঘরে পানি থাকায় খাওয়া, ঘুমসহ সব ধরণের দৈনন্দিন কাজ করতে হচ্ছে ভোগান্তির মধ্যে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার কালমাটির বাসিন্দা সাইদুল ইসলাম বলেন, গত তিনদিন ধরে বাড়িতে পানি। চুলা জ্বালাতে সমস্যা হচ্ছে। সাইদুলের স্ত্রী বলেন, দিনে একবার রান্না করাই কষ্টকর। এছাড়া গৃহপালিত পশুর খাদ্য জোগানেও বেগ পেতে হচ্ছে। একই এলাকার নদীর তীরবর্তী বাসিন্দা সহিদার রহমান বলেন, তিনদিন ধরে পানি বৃদ্ধি থাকলেও গতকাল রাত ১১ টার দিকে হঠাৎ পানির চাপ বৃদ্ধি পায়। পানির ভয়ংকর শব্দে রাতের ঘুম হারিয়ে যায়। গতরাতে তার প্রতিবেশির একটি ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) বেলা ৩ টায় লালমনিরহাটের হাতিবান্ধায় তিস্তার ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড হয়েছে ৫১.৯১ মিটার। বিপৎসীমার মাত্র ২৪ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হয় পানি এ সময়।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার রায় বলেন, টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তাসহ লালমনিরহাটের সবকটি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপদসীমা অতিক্রম না করলেও তিস্তা নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তবে পানি দ্রুত নেমে যাবে বলে আশা করেন তিনি।
নদীতে পলি পড়ে পানি ধারণ ক্ষমতা কমে আসায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান তিনি। বলেন, পানি কমে গেলে কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিতে পারে। ভাঙন ঠেকাতে আপদকালীন কাজ হিসেবে জিও ব্যাগ ফেলা হবে।
বিডি২৪অনলাইন/লাজু মিয়া/সি/এমকে